সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের (Bangladesh)সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তারি নিয়ে সর্বত্র তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এনিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত ব্যক্ত করছেন সকলে। গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে দেশের প্রথম সারির সংবাদপত্রে প্রকাশিত ‘বিতর্কিত’ প্রতিবেদনটি মহান স্বাধীনতাকে হেয় করার শামিল বলে মন্তব্য করেছে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ (Editors’ Guild Bangladesh)।
শুক্রবার সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু ও সাধারণ সম্পাদক ইনাম আহমেদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করা হয়। প্রতিবেদনটির সমালোচনা করে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘‘এটি সাংবাদিকতার নামে অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের ধারাবাহিক চেষ্টার অংশ। বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ সাংবাদিকতা নয়, অপ-সাংবাদিকতা।” এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনও প্রতিবেদনের ব্যাপারে কেউ ক্ষুব্ধ হলে মামলা দায়েরের আগে আমরা প্রেস কাউন্সিলের মতামত নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” সরকারের একাধিক মন্ত্রীও বলছেন প্রতিবেদনে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যে কারণে মামলার পর শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আমার বিরুদ্ধে একটাও কথা বললে…’, কেজরিওয়ালের অসম সফরের আগে হুঁশিয়ারি হিমন্তর]
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (DSA) প্রয়োগ অবিলম্বে স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের (UN) মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকের টুর্ক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান তিনি। ভলকের বলেন, ”বাংলাদেশে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন এবং অনলাইনে সমালোচকদের কণ্ঠরোধের জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন যেভাবে প্রয়োগ হচ্ছে তাতে আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমি আবারও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এ আইনের প্রয়োগ স্থগিত করতে অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী এই আইনের প্রয়োগ ও সংস্কারের আহ্বান জানাই।”
[আরও পড়ুন: এবার জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্কে শতরূপ ঘোষ, শুভেচ্ছা কুড়োতে ব্যবহার করেন লেনিনের জন্মদিন!]
রাষ্ট্রসংঘ (UN) এরই মধ্যে আইনটি পুনর্মূল্যায়ণ বা সংশোধনে সহায়তার জন্য বিস্তারিত প্রযুক্তিগত মতামত দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর কার্যকর হওয়ার পর থেকে এই আইনে দু’হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। সবশেষ ২৯ মার্চ শামসুজ্জামান এর শিকার হয়েছেন। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করার পাশাপাশি ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এমনকী নাকচ করা হয়েছে তাঁর জামিনের আবেদনও। এছাড়া, এই আইনের মামলায় আসামি করা হয়েছে সংবাদপত্রটির সম্পাদক (Editor) মতিউর রহমান ও একজন চিত্র সাংবাদিককেও। বাংলাদেশে জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট সংকট নিয়ে একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি করা হয়। গত বুধবার ভোরে সাভারে শামসুজ্জামানের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।