সুকুমার সরকার, ঢাকা: কক্সবাজারের (Cox Bazar Fire) উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আগুন। পুড়ে ছাই প্রচুর ঘরবাড়ি এবং হাসপাতাল। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই।
শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৪) ডি-২ ব্লকে আগুন লাগে। তাতে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে দাতব্য সংস্থা পরিচালিত একটি হাসপাতাল। শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’ নামে ওই হাসপাতালটির দু'টি শেডের ১৩টি কক্ষ-সহ প্রচুর চিকিৎসা সরঞ্জাম পুড়ে গিয়েছে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা বলেন, "খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।" হাসপাতালের আধিকারিক চিকিৎসক মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকি বলেন, "আগুনে পুরো হাসপাতালটিই পুড়ে গিয়েছে। এই হাসপাতালে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও বিনামূল্যে পরিষেবা পান।"
বাংলাদেশ প্রশাসন জানিয়েছে, মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে অন্তত ৭০ রোহিঙ্গার বাস। বাঁশ-ত্রিপলের ঘরবাড়িগুলিও গা ঘেঁষাঘেঁষি করে রয়েছে। ফলে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। যদিও খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও আগুন লেগেছিল কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের বি ব্লকে। সেখানেও পাঁচটি ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছে।
মধুরছড়া শিবিরের নেতা আমান উল্লাহ বলেন, "আগুন লাগার সময় অধিকাংশ বাসিন্দা ঘুমিয়ে ছিলেন। রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুন লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে।" রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগার ঘটনা অবশ্য প্রথম নয়। এর আগেও অনেকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গা নেতারা জানান, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে অগ্নিকাণ্ডে এক হাজারের বেশি ঘরবাড়ি পুড়েছে। সেই ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছিল একজনের। গত সাত বছরে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আগুন লেগেছে অন্তত ২০০ বার। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নথিভুক্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর। গত এক বছরে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসেছেন।
