সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঢাকা সফরের পরেও থামছে না হিন্দু নির্যাতন। ফের বাংলাদেশে আক্রান্ত ইসকনের সদস্য! অভিযোগ, তাঁকে প্রাণে ফেলার চেষ্টা করেছে মৌলবাদীরা। মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব কলকাতার ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস। রাষ্ট্রসংঘের কাছে তাঁর প্রশ্ন, বাংলাদেশে হিন্দুদের গণহত্যা হলে তবে জাগবেন?
সোমবার ঢাকায় পা রাখেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বিদেশ সচিব মহম্মদ জসীমউদ্দিনের সঙ্গে। আলোচনায় হিন্দু নির্যাতন উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু তাতেও বদলায়নি পরিস্থিতি। এদিন রাতেই ঢাকার উত্তয়ায় হামলার শিকার হলেন এক হিন্দু। আজ মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তি অঝোরে কাঁদছেন। সেই ব্যক্তি নিজেকে ইসকনের সদস্য বলে দাবি করেন। ভিডিওটি তিনি নিজেই করছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "সোমবার রাতে কয়েকজন ছেলে এসে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার ফোন নিয়ে চলে গিয়েছে। কিছু হলেই খালি ওরা হুমকি দেয় দেশ ছেড়ে চলে যা। কেন যাব? এই দেশ কি আমার নয়। আমার পূর্বপুরুষরাও এই দেশকে স্বাধীন করার জন্য রক্ত ঝরিয়েছে। ওরা এইভাবে এসে আমাকে মেরে গেল কেউ কিছু করল না। হিন্দু হওয়াই কি আমার অপরাধ?" ওই ব্যক্তির অভিযোগ, মৌলবাদীরাই তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রাধারমণ দাস আর একটি ভিডিও তুলে ধরেন এক্স হ্যান্ডেলে। যেখানে এক মৌলবাদী নেতা ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন বলে উল্লেখ করে। পাশাপাশি গণহত্যার হুঁশিয়ারিও দেয়। যা শেয়ার করে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে তাঁর প্রশ্ন,'বাংলাদেশের চলমান ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি আপনার নীরবতা এবং চোখ বন্ধ করে রাখা দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক। প্রকাশ্যে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যার এই আহ্বান শুনুন এবং জেগে উঠুন।' উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ঢাকার এক ইসকন সেন্টারে আগুন লাগিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা! হামলা হয় মন্দিরেও। পুড়ে যায় লক্ষ্মীনারায়ণের মূর্তি। সেই ঘটনারও কড়া নিন্দা করেছিলেন রাধারমণ দাস।
গতকাল দিল্লির উদ্বেগের কথা আলোচনা হয় বিক্রম-ইউনুস বৈঠকে। বিদেশ সচিব মনে করান, জনগণই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল সূত্র। ফলে বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ভারত সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, বিশেষত সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্রম মিসরি।। ধর্মীয়স্থান, সংখ্যালঘুদের সম্পত্তিতে হামলার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। কিন্তু ফের ধরনের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইউনুস সরকার।