সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণ অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। চিকিৎসার জন্য ঢাকার বাইরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও। ফলে রাজনীতির ময়াদনে বড় মাথারাই এখন অনুপস্থিত। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে আসরে নেমেছে জামাত-ই-ইসলামি। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপর আরও প্রভাব বিস্তার করছে পাকিস্তানপন্থী দলটি। খালেদা জিয়া দেশ ছাড়ার আগেই তড়িঘড়ি প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জামাতের আমির শফিকুর রহমান। কী নিয়ে আলোচনা করলেন তাঁরা?
গতকাল লন্ডনে পা রেখেছেন খালেদা জিয়া। এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আলোচনায় বসেন ইউনুস ও শফিকুর রহমান। এই বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আয়োজিত এ বৈঠকে নির্বাচন, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এই সাক্ষাতের পরই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, খালেদা ঢাকা ছাড়তেই আর কোনও সময় অপচয় করতে চায় না জামাত।
শেখ হাসিনার পতনের পর এখন ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া খালেদা জিয়ার বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে জামাত-ই-ইসলামির মতো মৌলবাদী দলও। ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য গড়ে ভোটে লড়ার চিন্তা করছে জামাত। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে অন্তত পাঁচটি ইসলামি দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক সেরে ফেলেছে তারা। প্রশ্ন উঠছে, এবার কী ধর্মের হাওয়া তুলে গণতন্ত্রকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় আসতে চাইছে জামাত? হাসিনা গদি হারানোর পর প্রায় সাড়ে ১৫ বছর পর স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে ফিরেছে ইসলামপন্থী জামাত। ভোটের ময়দানে নামতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তারা।
এর আগে সাধারণ মানুষের ভোটদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে মসনদে বসেছে বিএনপি, আওয়ামি লিগের মতো রাজনৈতিক দল। কিন্তু জামাত মৌলবাদী সংগঠন। নির্বাচনে লড়াই করলেও খুব বেশি আসনে জিততে পারেনি তারা। হাসিনার আমলে খুব বেশি প্রভাবও বিস্তার করতে পারেনি জামাত। কিন্তু বাংলাদেশের এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এখন ক্ষমতায় ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। জামাতের উপর থেকে তৎকালীন হাসিনা সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জেল থেকে মুক্তি আল কায়দা ছায়া সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দিন রহমানি। বিভিন্ন মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছে রাজাকাররা। অনেকেই মনে করছেন, পরোক্ষভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে চালনা করছে জামাত। যা মাথাব্যথার কারণ বিএনপির। আর এখন হাসিনা-খালেদা কারওই দেশে না থাকার সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে জামাত।