সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানালেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন চুপু এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু ঢাকায় সম্মান জানানোর সময় জুতো পরে স্মৃতিসৌধের চত্বরে প্রবেশ করার অভিযোগ উঠল ইউনুসের বিরুদ্ধে। তসলিমা নাসরিন ফেসবুকে সেই ছবি শেয়ার করে খোঁচা দিয়েছেন তাঁকে।
ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, 'শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি জুতো খুলে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মান জানিয়েছেন, নোবেলজয়ী উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধের চত্বর জুতোয় মাড়িয়ে তাঁদের সম্মান জানিয়েছেন।' সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছবি। শুরু হয়েছে বিতর্ক। কোনও কোনও নেটিজেন লিখেছেন, 'প্রকৃত শিক্ষার একান্তই অভাব।' অনেকে একে 'ক্ষমতার অহঙ্কার' বলেও তোপ দেগেছেন।
প্রসঙ্গত, তসলিমা নাসরিন আরও একটি পোস্টে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ইউনুসের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনকে ব্যঙ্গ করেছেন। তাঁর মতে 'মুক্তিযুদ্ধকে এবং একাত্তরের ইতিহাসকে উধাও করে' দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। একে দ্বিচারিতা বলে তোপ দেগে তাঁর কটাক্ষ 'দর্শকদের এত বোকা ভাবলে চলবে? কথা আছে না, আমাকে তুমি কিছুদিন বোকা বানাতে পারো, কিন্তু প্রতিদিন পারো না?'
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিল, তখন বহু বাঙালি বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ছিল এই ঘৃণ্য চক্রান্তের নেপথ্যে। এর ঠিক দুদিন পরই ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়ের বাজার, ইটখোলা ও মিরপুরের বধ্যভূমি-সহ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে প্রতি বছর। এদিনও বাংলাদেশের সমস্ত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনাসভা, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।