সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'হিন্দু না মুসলিম, ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?' এ হেন প্রশ্ন তোলা সম্প্রীতির কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে কবর দেওয়া হবে কট্টরপন্থী, মৌলবাদী, ভারতবিদ্বেষী, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে (Osman Hadi)। বাংলাদেশের একাধিক সাংবাদমাধ্য়মের দাবি, এমনটাই ইচ্ছে হাদির পরিবারের। যদিও 'একই বৃন্তে দুটি কুসুম...'-এর কবির পাশে ভারতবিদ্বেষী চরমপন্থী যুব নেতাকে সমাধিস্ত করা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে পদ্মপাড়ের মুক্তমনারা। আপাতত যাঁরা কোণঠাসা।
শুক্রবার ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, শহিদ ওসমান হাদির মরদেহ বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে হিমাগারের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সেখানে মরদেহ সংরক্ষণের পর ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে গিয়ে অবস্থান করবেন। পোস্টে আরও জানানো হয়, দাফনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শেষকৃত্যের আচার পালিত হবে। এরপর আগামিকাল মিছিল-সহ মরদেহ সেন্ট্রাল মসজিদে আনা হবে। সব শেষে পরিবারের ইচ্ছে মতো নজরুলের সমাধির পাশে কবর দেওয়া হবে হাদিকে।
জুলাই আন্দোলনে উত্থান ওসমান হাদির। পরে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। হাসিনা ও আওয়ামি বিরোধিতার পাশাপাশি ছাত্র নেতার অন্যতম এজেন্ডা ছিল ভারত বিরোধিতা। উত্তরপূর্ব ভারতের বেশ কিছু অংশ জুড়ে ‘গ্রেটা’র বাংলাদেশের ম্যাপ প্রকাশ করে বিতর্ক উসকে দিয়েছিলেন হাদি। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার রাস্তায় অজ্ঞাত আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম হন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাতে দেশের দুই সংবাদমাধ্যম, ভারতীয় দূতাবাস, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট, আওয়ামি লিগের অফিসে হামলা হয়। উত্তেজিত জনতা চট্টগ্রামে খুন করে এক সাংবাদিককে। এক সংখ্যালঘু যুবককে হত্যা করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংগঠন ছায়ানটকে ধ্বংস করে, রবীন্দ্রনাথের ছবিতে আগুন দেয়, তাদের নেতা কি কাজী নজরুল ইসলামের মতো ধর্মনিরেপক্ষ উদার কবির পাশে দাফনের যোগ্য?
