সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র তথা জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে কট্টরপন্থীদের তাণ্ডব। ভারত-বিদ্বেষের পালে হাওয়া দিতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানটে রাতভর চলল ধ্বংসযজ্ঞ। পুড়িয়ে দেওয়া হল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি-বই। ভেঙে ফেলা হল অসংখ্য বাদ্যযন্ত্র।
বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে ছায়ানটে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে দেওয়া ভবনে। আছড়ে ভেঙে ফেলা হয় হারমোনিয়াম-সহ বহু বাদ্যযন্ত্র। পাশাপাশি, পুড়িয়ে দেওয়া হয় রবি ঠাকুরের বই এবং ছবি। ছেঁড়া হয় লালন ফকিরের ছবিও। শুধু তাই নয়, বহু বাদ্যযন্ত্রও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। ছায়ানটের একাধিক ছবি এবং ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল)। সেখানে দেখা গিয়েছে, ভবনের ভিতরের কক্ষগুলি তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভাঙচুরের পাশাপাশি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু বাদ্যযন্ত্র। কক্ষগুলিতে পড়ে রয়েছে ছাইয়ের স্তূপ। এমনকী ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সনজীদা খাতুনের ছবিও ছিঁড়ে ফেলেছে হামলাকারীরা।
আছড়ে হারমোনিয়াম ভেঙে ফেলছেন এক বিক্ষোভকারী।
তছনছ ছায়ানটের কক্ষ।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “রাতে একদল বিক্ষোভকারী হঠাৎ ভবনে হামলা চালায়। ভবনের চার ও পাঁচ তলায় আগুন দেওয়া হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।” এদিন রাতে মুজিবের বাড়ি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত জনতা। বাড়ি গুঁড়িয়ে দিতে চালানো হয় বুলডোজার। ছায়ানটে হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। তিরস্কৃত হচ্ছেন সেদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস।
ছেঁড়া হল লালনের ছবি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় হাদির। ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র্য প্রার্থী ছিলেন তিনি। বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেই সময় নমাজ সেরে রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটর সাইকেলে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে কে বা কারা হামলা করল, তা এখনও অজ্ঞাত। বুধবার রাতেই ইউনুসের প্রেস উইং জানিয়েছিল, হাদির শারীরিক অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেই ঘোষণার পর থেকেই বাড়ছিল আশঙ্কা। অবশেষে বৃহস্পতিবার মিলল দুঃসংবাদ। আর তারপরই ফের অশান্ত হয়ে উঠল বাংলাদেশ।
