সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে (Osman Hadi Dies) বৃহস্পতিবার রাত থেকে উত্তাল বাংলাদেশ। বিক্ষোভ দেখাতে ঢাকা-সহ একাধিক জায়গায় পথে নেমেছে জনতা। রাতভর তাণ্ডবে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উর রহমানের বাড়িতে চালানো হয়েছে বুলডোজার। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমের অফিসগুলিতে। জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের মুখে ছিল শেখ হাসিনা এবং ভারত-বিরোধী স্লোগান। অন্যদিকে, ময়মনসিংহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে এক হিন্দু যুবককে। পাশাপাশি, খুলনায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এক সাংবাদিককেও।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এদিন রাতে মুজিবের বাড়ি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত জনতা। বাড়ি গুঁড়িয়ে দিতে চালানো হয় বুলডোজার। শুধু তাই নয়, ঢাকার ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনেও হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুরের পর লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, "রাতে একদল বিক্ষোভকারী হঠাৎ ভবনে হামলা চালায়। ভবনের চার ও পাঁচ তলায় আগুন দেওয়া হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।" অন্যদিকে, ময়মনসিংহের ভালুকায় এক হিন্দু যুবকের বড়িতে এদিন রাতে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পিটিয়ে খুন করার পর তাঁর দেহ গাছে বেঁধে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। নিহত যুবকের নাম দীপু চন্দ্র দাস। তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় হাদির। তারপরই বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে আশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাতের দিকে বাংলাদেশের নামী সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের দপ্তরে হাজির হয়ে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ‘প্রথম আলো’র কার্যালয়ে। এদিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি কর খুন করে দুষ্কৃতীরা। মৃতের নাম ইমদাদুল হক মিলন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক সাংবাদিক।
উল্লেখ্য, ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র্য প্রার্থী ছিলেন হাদি। বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেই সময় নমাজ সেরে রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটর সাইকেলে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে কে বা কারা হামলা করল, তা এখনও অজ্ঞাত। বুধবার রাতেই ইউনুসের প্রেস উইং জানিয়েছিল, হাদির শারীরিক অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেই ঘোষণার পর থেকেই বাড়ছিল আশঙ্কা। অবশেষে বৃহস্পতিবার মিলল দুঃসংবাদ। আর তারপরই উত্তপ্ত হল বাংলাদেশ।
