সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানিয়েছেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম। বিশ্লেষকদের মতে, পতাকা বিতর্কের পর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে ইসলামাবাদ।
রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম জানান, লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের (Queen Elizabeth) শেষকৃত্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। তখনই এই আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাসনিম বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকবার আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।” তিনি আরও জানান, রানির শেষকৃত্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গেও দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মায়ানমারে যুদ্ধের আঁচ বাংলাদেশে, তবে এখনই সেনা মোতায়েন করতে চাইছে না ঢাকা]
বিশ্লেষকদের মতে, পতাকা বিতর্কের আবহে আপাতত ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে ইসলামাবাদ। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতীয় পতাকাকে বিকৃত করে গত জুলাই মাসে ছবি প্রকাশ করে ঢাকার (Dhaka) পাকিস্তান হাইকমিশন। আর তা ঘিরে অশান্তির আবহ তৈরি হয় বাংলাদেশে। একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ন’মাস যুদ্ধের পর স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। ন’ মাসের যুদ্ধে বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান। ১০ লক্ষ নারীর সম্মানহানি করে পাকিস্তানি সেনারা। ওই যুদ্ধে মিত্রবাহিনী ভারতের ১৮ সেনাও শহিদ হয়েছেন। পাক হানাদার বাহিনীর সেই নিষ্ঠুরতার কথা কখনও ভোলেনি বাংলাদেশ। এই অবস্থায় ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের তরফে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করা একটি ছবি আচমকাই সেই রোষ উসকে দেয়। সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে বিকৃত করা হয়। আসল পতাকার উপর বসিয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানি পতাকার প্রতীক চাঁদ, তারা। তবে চাপের মুখে সেই ছবি সরিয়ে নেয় পাক হাইকমিশন।
উল্লেখ্য, কূটনীতিকদের একাংশের মতে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরাতে সদা তৎপর পাকিস্তান। মৌলবাদী শক্তিগুলিকে উসকানি দিয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাস ছড়িয়ে হাসিনা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে আইএসআই। কারণ, ভারতবিরোধী জঙ্গি সংগঠনগুলিকে উৎখাত করেছেন হাসিনা। ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সন্ত্রাসবাদ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সবমিলিয়ে, বাংলাদেশে ফের নিজের প্রভাব বৃদ্ধি করতে চাইছে ইসলামাবাদ।