সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনাহীন বাংলাদেশে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরও কমেনি হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার। তারই প্রমাণ মিলল এই নিন্দনীয় ঘটনায়। রেহাই দেওয়া হল না অন্তঃসত্ত্বাকেও। জানা গিয়েছে, শিখারানি রায় নামে এক অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে ক্রমাগত ইস্তফা দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তিনি তা করতে অস্বীকার করায় নেমে আসে অত্যাচারের খাঁড়া। অভিযোগ, ওই অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে মারধর করে রাস্তায় হাঁটানো হয়। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও।
সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন শিখাকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ বিলাল। কিন্তু রাজি হননি শিখা। তার পর থেকেই তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছিল। দিন দুয়েক আগে এর প্রতিবাদ করেন শিখা। সাফ জানিয়ে দেন, অযথা তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, এটা অন্যায়। ইস্তফা তিনি দেবেন না। অভিযোগ, এর পরই মারধর করা হয় অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে। শুধু তাই নয়, রীতিমত পাকড়াও করে হাঁটানো হয় রাস্তায়। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়। তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণেই এই বর্বর নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে।
ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ঘটনার ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছে, ওই অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে হাত ধরে টানতে টানতে রাস্তায় হাঁটানো হচ্ছে। ঘিরে রয়েছে মুসলিমরা। এই কাণ্ড থামানো তো দূর, উলটে আশপাশের লোকজন রাস্তায় জড়ো হয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করছে। ভিডিও করার পাশাপাশি চিৎকার করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। যা অনেক নেটিজেনই নিন্দায় সরব হয়েছেন। একজন যেমন লিখেছেন, 'হিন্দু হওয়ায়ই কি ওই শিক্ষিকার অপরাধ?'। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। সকলেই শিক্ষিকার উপর হওয়া অত্যাচারের বিচার চেয়ে সুর চরিয়েছেন। একই সঙ্গে এই সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন এই ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। এতে আতঙ্ক আরও বেড়েছে হিন্দুদের মনে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ছেড়ে তিনি আপাতত ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার পর থেকে সেদেশে হামলার শিকার হন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। বিশেষ করে হিন্দুদের উপর আক্রমণ বাড়ে। তাঁদের বাড়ি-ঘর, দোকানপাট, সম্পত্তিতে ভাঙচুর করা হয়। বহু হিন্দুমন্দিরও ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের নিপীড়ন নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতও।