সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের বিদেশ সচিবের ঢাকা সফরের বৈঠকে সংখ্যালঘু নির্যাতন রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল ইউনুস সরকার। যদিও ত্রাসের দেশ বাংলাদেশে এবার মন্দিরের মধ্যেই খুন হলেন বৃদ্ধ পুরোহিত! নাটোরের কাশিমপুর শ্মশানকালী মন্দিরের সেবায়েতকে খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত পদ্মাপাড়ের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। যদিও বাংলাদেশে পুলিশের দাবি, ওই মন্দিরে নিছক ডাকাতির ঘটনাই ঘটেছে। এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে কলকাতা ইসকন। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর "অবাধে নির্যাতন চলছে, খুন করা হচ্ছে"।
গত কিছুদিনে বাংলাদেশের একাধিক মন্দিরে হামলা হয়েছে, ভাঙা হয়েছে বিগ্রহ। ময়মনসিং এবং দিনাজপুরে তিনটি মন্দিরের মোট আটটি মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। অধিকাংশ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এমনকী কোনও মামলাও রুজু হয়নি। একটি ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে জেলবন্দি করা হয়েছে। এদিকে হাসিনার পতনের পরেই সংখ্যালঘু শিক্ষক, অধ্যাপকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর খবর আসছিল। মন্দিরে হামলার পাশাপাশি সম্প্রতি কট্টরপন্থীরা তিতুমির কলেজের প্রিন্সিপাল শিপ্রা রানি মণ্ডলকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের মন্দিরে হামলার দুটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র রাধারমণ দাস। এদিনও পুরোহিত খুনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছেন ইসকনের সন্ন্যাসী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, "বাংলাদেশে নাটোরের কাশীমপুর শ্মশানের মন্দিরে হামলার ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছি। লুট হয়েছে। সেবায়েত তরুণ চন্দ্র দাসকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। ওঁর হাত-পা বাঁধা দেহ উদ্ধার হয়েছে। এমনকী হিন্দুদের সৎকারের স্থানও আর নিরাপদ নয়।"
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, হিন্দু বিতারণ করে, মুসলিম দেশ গঠনে কোমর বেঁধে নেমেছে জামাত। মৌলবাদীরা সমর্থন পাচ্ছে ইউনুস সরকারের। এই কারণেই আইন হাতে তুলে নিলেও বিপদে পড়ছে না কট্টরপন্থীরা। একটি বিষয় স্পষ্ট যে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঢাকা সফরে লাভ হয়নি। এই অবস্থায় বাংলাদেশে লাগাতার সংখ্যালঘু নির্যাতনে আঙুল উঠছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে। যারা হিন্দুত্বের এজেন্ডায় ক্ষমতায় এসেছেন। প্রশ্ন উঠছে, শক্তিশালী প্রতিবেশী হয়েও কেন হাত গুটিয়ে বসে আছে দিল্লি? প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিকে পাশে রেখে অনেকেই ১৯৭১-এর ইন্দিরা গান্ধী সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের তুলনা টানছেন, সমালোচনা করছেন বর্তমান মোদি সরকারের ভূমিকার।