সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে বিদুৎ সরবরাহ নিয়ে আদানি সংস্থার সব চুক্তি বাতিল চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছিল। এবার এনিয়ে রিট পিটিশন দাখিল হল হাই কোর্টে। রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। এর এক সপ্তাহ আগেই চুক্তি বাতিল নিয়ে নোটিস পাঠানো হয়। ফলে বিদ্যুৎ নিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে লড়াই পৌঁছে গিয়েছে আদালতে!
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর কার্যকর হওয়া আদানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বুধবার হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দাখিল করেন ব্যারিস্টার এম আবদুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, হাইকোর্টে আগামী সপ্তাহে আবেদনের শুনানি হতে পারে। এর আগে গত ৬ নভেম্বর পিডিবি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি সচিবকে তিন দিনের মধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে একতরফা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা বা বাতিল করতে আইনি নোটিস পাঠান এই আইনজীবীই।
রিট পিটিশনে আব্দুল কাইয়ুম জানিয়েছেন, অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন যে এই চুক্তির আওতায় নিম্নগ্রেডের কয়লার বিদ্যুতের জন্য অন্যান্য বিদ্যুতকেন্দ্রের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বেশি দাম দেবে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ায় আদানির মালিকানাধীন একটি খনি থেকে কয়লা সরবরাহ করা হবে ভারতে আদানিদের একটি বন্দরে। সেই কয়লা বাংলাদেশের খরচে তৈরি গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হবে। এর সঙ্গে আধিকারিকরা জড়িত না থাকলে পিবিডিবি কীভাবে এই একতরফা চুক্তি করেছে তা অকল্পনীয়। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এই রিট আবেদনটির উপর শুনানি হবে। জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে।
এখন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির সভায় ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য় সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়। এসব তথ্য বা নথি কমিটিকে দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র। এদিকে, বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিচ্ছে আদানি গ্রুপ। অবশ্য কিছু বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। ৮৪ কোটি ডলারের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ কোটি ডলার দ্রুত শোধ করে দিতে বলা হয়েছে।