সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা শরীয়তপুরের মশুরা ঘোষপাড়া মন্দিরে দুর্গাপুজো হচ্ছে গত ৫০ বছর ধরে। প্রতিবছরই মন্দিরটিতে ব্যতিক্রমী কিছু আয়োজন ও সাজসজ্জা করা হয়। এ বছর দেবী দুর্গার ৯টি রূপের নবদুর্গা প্রতিমায় পুজো হবে এই মন্দিরে। পূজারিদের কথায়, হিন্দুধর্মের পুরাণমতে, নবদুর্গা বলতে দেবী পার্বতীর ৯টি রূপকে বোঝানো হয়। শরৎকালে নবরাত্রির ৯ দিনে প্রতিদিন দেবী পার্বতীর এই নবরূপের এক একটির পুজো করা হয়। এ বছর ওই ৯ রূপের প্রতিমা মশুরা ঘোষপাড়া মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই বছর জেলার ১০২টি মন্দিরে নানা সাজসজ্জা ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিমা প্রস্তুত করার মধ্য দিয়ে দুর্গাপুজো উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা। জেলা পুজো উদযাপন পরিষদের নেতারা বলেন, শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০২টি মন্দিরে এ বছর দুর্গাপুজো হচ্ছে। প্রতিটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। এখনও চলছে রঙের কাজ ও মন্দির-প্যান্ডেলে সাজসজ্জার কাজ।
অপরদিকে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাঁচক দাসপাড়া মন্দির সাজানো হয়েছে অকালবোধনের প্রতিমা ও ১০৮টি পদ্ম ফুলের পদ্মবিলাস দিয়ে। মন্দিরের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিকাশ দাস জানা ন, শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালের আগে অকালে দেবী দুর্গার পুজো করেন। হিন্দু পুরাণমতে, এর নাম অকালবোধন। অকালবোধনের পুজোর সময় ১০৮টি পদ্মফুল নিবেদন করতে হয়। এ বছর তাঁরা অকালবোধনের প্রতিমা স্থাপনের পাশাপাশি ১০৮টি পদ্ম ফুল মন্দিরে স্থাপন করেছেন। প্রতিমার রং করা হয়েছে পদ্ম ফুলের রঙে।
প্রতিমা শিল্পী রাজীব সরদারের কথায়, "আমরা আটজন শিল্পী দুমাস ধরে প্রতিমা নির্মাণের কাজ করেছি। বুধবার ষষ্ঠীপুজোর মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হবে। আমরা মঙ্গলবারের মধ্যে প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে পারব।" শরীয়তপুর জেলা পুজো উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি শংকর প্রসাদ চৌধুরী বলেন, "এ বছর ভিন্ন একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা পুজো উদযাপন করছি। মনে শঙ্কা থাকলেও সব মন্দিরে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজো হবে।" শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা শাসক সাদিয়া জেরিন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পুজো উদযাপন হবে, এমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতি উপজেলার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে সক্রিয় থাকবেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।