সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহম্মদ ইউনুসের 'নতুন' বাংলাদেশে ফের হামলা মন্দিরে। মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরে ঢুকে সরস্বতী প্রতিমার মাথা ভেঙে দেয় এক যুবক! এই ঘটনা লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌর শহরের শ্রী শ্রী মহামায়া মন্দিরের। এতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার হিন্দুদের মধ্যে। সম্প্রতি এক বাংলাদেশেরই এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছিল, শেখ হাসিনার পতনের পর মাত্র ৫ মাসে ধ্বংস করা হয়েছে ১৩৩টি মন্দির। বর্তমানে যে এই সংখ্যাটা আরও বেড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর লাগাতার এই ঘটনা ঘটলেও চোখ বুজে রয়েছে ইউনুসের প্রশাসন।

বাংলাদেশের একাদিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মন্দির কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র কর্মকারের অভিযোগ, মন্দিরের সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। মন্দিরের পুরোহিত পাশের বাড়িতে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর মন্দিরের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মুখে রুমাল বেঁধে এক যুবক মন্দিরে ঢুকছে। এরপর প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির উদ্দেশ্যেই প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও জেলা পুজো উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিমুল সাহা বলেন, যারাই এই প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এনিয়ে রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রতিমা ভাঙার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল যায়। কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে প্রতিমাগুলো ভেঙেছে, তা বের করার জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই ঘটনার পর মন্দিরে যান।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ফেসবুকে তিনি লেখেন, 'দোলের আগের রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার একটি মন্দিরে ঢুকে সরস্বতী মূর্তি ভেঙেছে মুখে রুমাল বাঁধা লোক। অনুমান করছি লোকটি মুসলমান। মূর্তিটা ভেঙ্গে তার কী লাভ হয়েছে? সম্ভবত ভেবেছে বিধর্মীর মূর্তি ভাঙলে তার বেহেস্তের টিকিট জুটবে। নিশ্চয়ই জীবনে খুব পাপ করেছে লোকটা, পাপস্খলন করতে হলে জিহাদ করতে হয়। মূর্তি ভেঙ্গে সে জিহাদ করল।'
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই দিকে দিকে মন্দিরে হামলা হচ্ছে। কিন্তু নভেম্বর মাস থেকে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন চরম আকার নিয়েছে। বাড়ি-দোকানপাটে হামলার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারারও অভিযোগ উঠেছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু। এখনও তিনি জেলবন্দি ভাঙচুর হয়েছে ইসকনের মন্দিরেও। যা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত। সম্প্রতি ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। কিন্তু তাতেও হিন্দু নির্যাতন রুখতে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। উলটে ইউনুসের উপদেষ্টারা একের পর এক ভারতবিরোধী মন্তব্য করে যাচ্ছেন। আর দিন দিন সংখ্যালঘু নিপীড়ন, মন্দিরে হামলা বেড়েই চলেছে।