সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে ভোট। পদ্মাপাড়ের নির্বাচনী ময়দানেও তারকামুখই তুরুপের তাস। মাহিয়া মাহি যেখানে নির্বাচনী টিকিট পেয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, সেখানে হিরো আলম সরে দাঁড়ালেন ভোটের ময়দান থেকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেয়েই নায়িকা মাহিয়া মাহি ছুটে গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায়। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানিয়েই তিনি শুরু করেছেন নির্বাচনী কার্যক্রম। সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিজেই জানিয়েছেন মাহি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী লিখেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মোনাজাত করে আমার নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করলাম।” বাংলাদেশের রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অভিনেত্রী শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া অর্থাৎ মাহিয়া মাহি। প্রথমে স্বাক্ষরের গড়মিল ও সমর্থকের তথ্য ভুল থাকায় গত ৩ ডিসেম্বর মাহির মনোনয়নটি বাতিল করা হয়েছিল। তিনি ফের আপিল করেন। এরপর ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানিতে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনী ময়দানে নেমেই তাঁর হুঙ্কার- তিনি যুদ্ধ করেই জিতবেন, লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। মাহির মন্তব্য, “টেনশনে ছিলাম আমার মনোনয়নপত্র নিয়ে। কারণ আমি আমার জায়গা থেকে সৎ। আজকে সেটারই প্রতিদান পেয়েছি আসলে। আমি শতভাগ বিশ্বাস করি যে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এখানে আমার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আমার এলাকার লোকজনই আমাকে নির্বাচনী প্রার্থী হওয়ার আবদার করেছেন। সকলের কাছে আমার জন্য দোয়া চাই আমি যেন আগামী ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের সেবা করতে পারি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”
বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনমূলক স্বাক্ষর তালিকা জমা দিতে হয়। সেই তালিকায় ‘ভুয়ো স্বাক্ষর’ পাওয়ার অভিযোগ এনে মাহির মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন রাজশাহীর রিটার্নিং আধিকারিক জেলা শাসক শামীম আহমেদ। তিনি বলেছিলেন, নায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়ার তালিকায় তিনটি নমুনা ভোটারের তথ্য পাওয়া যায়নি। আর একজন ভোটার নয়। তালিকায় ললিতা মান্ডি নামের একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলের ভোটার। অন্যদিকে মাহি বলেছিলেন, “আমার কাছে প্রমাণ আছে, প্রত্যেকে (ভোটার) নিজে উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষর করেছে। সেই ভিডিও আছে। আমি প্রমাণ দেখিয়ে আপিল করব।” আপিল শুনানিতে মাহির যুক্তি গ্রহণ করে তার মনোনয়নপত্রকে বৈধতা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
[আরও পড়ুন: রাত পোহালেই মিস থেকে মিসেস, রীতি মেনে বৃদ্ধি-অধিবাস সারলেন কনে দর্শনা]
অপরদিকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করলেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টেই সেই ঘোষণা করেন তিনি। জেলা বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন তিনি। হলফনামাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করা-সহ নানা ত্রুটির কারণে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে চলতি সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনে শুনানি শেষে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবু তিনি ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়ালেন।
এদিকে ক্রেডিট কার্ড খেলাপির দায়ে বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন গায়িকা তথা অভিনেত্রী ডলি সায়ন্তনী। গায়িকা জানান, আমি বেশ সাড়া পাচ্ছি। এলাকাবাসীর সঙ্গে আমার সবসময় কথা হচ্ছে। আমি আশাবাদী আমি জয়ী হব।” ডলি সায়ন্তনী কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের জন্মস্থান পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত প্রার্থী।