সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবশেষে স্বস্তি। বাংলাদেশের (Bangladesh) সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করল ঢাকার আদালত। তবে পাঁচ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ড এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। অর্থাৎ মামলা চলাকালীন রোজিনা দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। রবিবার ঢাকা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনার আবেদনে সিলমোহর দেন। তাঁর জামিনে ফের খুশির হাওয়া বাংলাদেশের সাংবাদিক মহলে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় দৈনিকের সিনিয়র জার্নালিস্ট পদে রয়েছেন রোজিনা।
নিজের পেশার স্বার্থে সত্য উদঘাটন করতে গিয়ে বিপদে পড়েন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। তদন্তমূলক সাংবাদিকতার (Investigative Journalism) জন্য বাংলাদেশে জনপ্রিয় রোজিনা। অভিযোগ, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনার জন্য একাংশের রোষানলে পড়েছেন তিনি। গত সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি কক্ষে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে আটকে রাখা হয় তাঁকে। অভিযোগ, হেনস্তার শিকার হন সাংবাদিক রোজিনা। রাতে তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টে মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি আওয়ামি লিগ, বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা রোজিনার মুক্তির দাবি জানান। জয়া আহসানের মতো বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের তারকা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহলেও তাঁকে মুক্তির দাবি ওঠে। মামলার তদন্তভার বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন মামলার শুনানি শেষ হলেও, সেদিন রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক বাকি বিল্লাহ।
[আরও পড়ুন: কোথায় আচ্ছে দিন! মাথা পিছু আয়ে ভারতকে পিছনে ফেলল বাংলাদেশও!]
রবিবার রোজিনার জামিন মঞ্জুরের পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক বাকি বিল্লাহ বলেছেন, ”গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম অনুষঙ্গ। গণমাধ্যমের কারণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দায়িত্বশীল আচরণ করে থাকে। কোর্ট ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করে।” এদিন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুরের পর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে একথা বলেন তিনি। একইসঙ্গে সাংবাদিক রোজিনাকে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের মামলায় পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
[আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপে রোহিঙ্গারা, বাংলাদেশের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে বলবৎ লকডাউন]
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগরের সরকারি আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু শুনানিতে বলেন, ”এটা স্পর্শকাতর মামলা। যদি আসামি পাসপোর্ট দাখিল করেন তাহলে তার জামিন দেওয়া যেতে পারে। এতে আমাদের কোনও আপত্তি নাই।” রোজিনার আইনজীবীর পালটা বক্তব্য ছিল, ”ঢাকা মহানগরের সরকারি আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছেন, আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমাদের পাসপোর্ট জমা রাখার ক্ষেত্রে কোনও দ্বিমত নাই।” উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করে বিচারক শর্তসাপেক্ষে রোজিনার জামিন মঞ্জুর করেছেন।