অর্ণব আইচ: ভ্যালেনটাইনস ডে’র আগে আকর্ষণীয় অফারের বন্যা। গোলাপ ফুল থেকে শুরু করে আংটি, সবই মিলছে অনলাইনে। আর এখানেই বিপদ দেখছে পুলিশ। লালবাজারের গোয়েন্দাদের মতে, প্রেমদিবসের উপহারের নামেই ফাঁদ পেতেছে সাইবার জালিয়াতরা। একবার তাদের পাতা জালে পা দিয়ে কোনও ধরনের লিংক ক্লিক করলেই নিমেষে ফাঁকা হয়ে যেতে পারে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। মুহূর্তেই সর্বস্ব হারাতে পারেন যে কেউ।
এই ব্যাপারে লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, ভ্যালেনটাইনস ডে’কে সামনে রেখে সাইবার অপরাধ যাতে না হয়, তার জন্য তাঁরা শহরবাসীকে সোশ্যাল মিডিয়া ও রেডিওর মাধ্যমে সচেতন ও সতর্ক করছেন। পুলিশের পরামর্শ, ভ্যালেনটাইনস ডে’র আগে অনলাইনে যতই আকর্ষণীয় অফার দেওয়া হোক না কেন, কেউ যেন মোবাইলে আসা কোনও লিংকে ক্লিক না করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও দেখা গিয়েছে যে, প্রেম দিবসের আগেই ফাঁদ পাতে জালিয়াতরা। কারণ, প্রেম দিবস মানেই প্রিয়জনের হাতে উপহার তুলে দেওয়া। তা যে ধরনের উপহারই হোক না কেন। আর এই সুযোগই নিচ্ছে সাইবার জালিয়াতরা। লালবাজারের গোয়েন্দাদের মতে, প্রেমদিবসের আগে কয়েকটি নামী ঋণদাতাকারী সংস্থার নাম করে ও ভুয়ো লোগো হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে দিয়ে ঋণের অফার দিতে শুরু করে জালিয়াতরা।
বলা হয়, প্রেম দিবসে প্রিয়জনকে নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসার জন্য অথবা মূল্যবান উপহার কিনে দিতেও দেওয়া হচ্ছে ঋণ। কেউ ২৫ হাজার টাকা আবার কেউ বা ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নেওয়ার অফার দিয়ে লিংক পাঠায়। বলা হয়, ওই লিংকে ক্লিক করলে মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই ঋণের টাকা পৌঁছে যাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। শুধু ব্যাংকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়। আবার একইভাবে ফাঁদ পাতে লোন অ্যাপের জালিয়াতরাও। তারাও ব্যাংকে অল্প টাকার ঋণের টাকা দেয়। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার পরও ব্ল্যাকমেল করে টাকা চাইতে শুরু করে লোন অ্যাপের চিনা বা নেপালি জালিয়াতরা।
[আরও পড়ুন: রোগের ভয় তুচ্ছ করে প্রেমের জোয়ারে HIV পজিটিভ যুগল, সাত পাকে বাঁধা পড়লেন সুনীতা-সৌমিত্র]
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বেশ কিছু নামী রিসর্ট, গেস্ট হাউস বা হোটেলের নাম করেও পাঠানো হয় অফার। অত্যন্ত সস্তায় দু’জনে লাঞ্চ বা ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের জন্য কুপন, আকর্ষণীয় গিফট কার্ড, এমনকী, রিসর্ট বা হোটেলে একসঙ্গে সময় কাটানোরও অফার দেওয়া হয়। যদিও পদ্ধতি সেই এক। পাঠানো হয় লিংক। আবার প্রেমদিবসের উপহার কেনার অফার দিয়েও জাল পাতে সাইবার জালিয়াতরা। অত্যন্ত সস্তায় আকর্ষণীয় অফার দেওয়া হয়, যা চোখে পড়লেই পছন্দ হয়ে যায় অনেকের।
প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই পাঠানো হয় লিংক। আর লিংক ক্লিক করলেই ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় মোবাইল বা কম্পিউটারে। সাইবার জালিয়াতরা মোবাইলের তথ্য জেনে নিয়ে ব্যাংক জালিয়াতি করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয় যাবতীয় টাকা। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, যতই আকর্ষণীয় অফার দেওয়া হোক, লিংক ক্লিক না করলে কোনও বিপদ নেই। তাই প্রত্যেককেই এই ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।