রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) বিরুদ্ধে টানা দু’টো ম্যাচে হার। বোলিংয়ের পর টিমের ব্যাটিংও কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে যাওয়া। আইপিএলের (IPL) রমরমার মধ্যে ভারতীয় টিমের এ হেন দুর্দশা মোটেও স্বস্তিদায়ক বিজ্ঞাপন নয়। আজ, মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারত আবার হারলে, সিরিজই শেষ হয়ে যাবে। ঠিক একই রকম ভাবে অস্বস্তি বাড়িয়েছে কটকের পিচ। সেটাও এখন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মতোই কাঠগড়ায়।
রবিবাসরীয় কটক আন্তর্জাতিক ম্যাচ পেল প্রায় দু’আড়াই বছর পর। এবং বরাবাটি স্টেডিয়ামের (Barabati Stadium) পিচ যে রকম আচরণ করেছে, তা মোটেও সুখকর নয়। কখনও কখনও বল দুম করে ভাল রকম নিচু হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও ডেলিভারি আবার চকিত ভেতরে ঢুকে এসেছে। কখনও আবার থমকে গিয়েছে বল। রুতুরাজ গায়কোয়াড় যে বলে আউট হন, সেটা থমকে গিয়েছিল। আর হার্দিকের আউট হওয়ার ডেলিভারিটা নিচু হয়ে ভেতরে ঢুকে আসে।
ভারতীয় টিম ম্যাচ হেরে কটক পিচকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে না। কিন্তু অনুযোগ অবশ্যই করেছে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় মিডল অর্ডার ব্যাটার শ্রেয়স আইয়ার বলে যান, পিচের দোহাই তাঁরা দিতে চান না। কিন্তু এটা ঘটনা যে, পিচ ভুগিয়েছে। পিচ প্রসঙ্গ গতকালের মতো চাপা পড়ে যায়, শ্রেয়সের পরবর্তী কিছু মন্তব্যে। যেখানে দীনেশ কার্তিকের অক্ষর প্যাটেলের পরে ব্যাট করতে নামা নিয়ে বলেন যে, স্ট্রাইক রোটেট করার কারণে অক্ষরকে আগে নামানো হয়েছিল। কিন্তু এ দিন আবার কটক পিচ নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গেল।
[আরও পড়ুন: উপত্যকায় জঙ্গিদমনে বড় সাফল্য, ২ জেহাদিকে নিকেশ করে অমরনাথ যাত্রায় হামলার ছক বানচাল]
আর সেই কাহিনি কার্তিক নিয়ে শ্রেয়সের যুক্তি পেশের মতোই চমকপ্রদ। শোনা গেল, ম্যাচের আগে পিচ তো বটেই, মাঠের কভার নিয়েও ভাল রকম ঝামেলায় পড়েছিলেন ওড়িশা ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা। আসলে সিএবির মতো নতুন একটা কভার ওড়িশা ক্রিকেট সংস্থাও কিনেছে। কিন্তু কী করে সেটা ব্যবহার করা যায়, সেটা তারা নাকি বুঝে উঠতে পারছিল না। তা ছাড়া ম্যাচের কয়েক দিন আগে থেকে আকাশ মেঘলা হয়ে বসেছিল। বেগতিক বুঝে সোজা ‘এসওএস’ আসে সিএবির কাছে। সেই মতো সিএবি গত ৭ জুন ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়কে পাঠিয়ে দেয় ওড়িশা। চার জন মাঠকর্মীকে নিয়ে ওড়িশা যান সুজন। সেখানে গিয়ে কভার কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে, তার ক্লাস নেন!
দাঁড়ান এখানেই শেষ নয়। পিচের হাল মোটেও সুবিধের ছিল না। শোনা গেল, পিচের উপরের আস্তরণ ‘হার্ড’ থাকলেও ভেতরে আদ্রর্তা হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে ম্যাচে অসমান বাউন্সের মুখে পড়েন ক্রিকেটাররা।
ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেরই মনে হচ্ছে, এ ভাবে ‘ময়শ্চার’ জমতে দেওয়া উচিত হয়নি। শুকিয়ে ফেলা উচিত ছিল। কেউ কেউ এ দিন বলছিলেন যে, খেলার আগে গত তিন-চার দিন রোদ না ওঠায় বিপত্তি আরও বাড়ে। পিচের যে অংশে আর্দ্রতা জমেছিল, তা শুকোতেই পারেনি। বলা হল, খেলার দিন সকালে (অর্থাৎ রবিবার) রোদ উঠেছিল বলে তবু কিছুটা মান বাঁচানো গিয়েছে। নইলে আরও ভোগান্তি থাকত কপালে।
সত্যি, ঋষভ পন্থদের কিছু ভাগ্য চলছে বটে!