ধীমান রায়, কাটোয়া: মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিহারের কুখ্যাত গাঁজা ও অস্ত্র কারবারিকে খুনের কিনারা করে ফেলল পূর্ব বর্ধমান পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায়। ধৃতদের নিয়ে টিআই প্যারেডের ভাবনাচিন্তা করেছে পুলিশ।
গত ১ জুন সন্ধেয় আউশগ্রামের বড়া গ্রামের কাছে ২ বি জাতীয় সড়কের ধারে নয়ানজুলি থেকে ৪৫ বছরের এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু তখন জানা যায়নি তার পরিচয়। তবে মৃতের শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন থেকে প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত ছিল যে খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। এরপর শুরু হয় তদন্ত। মৃত ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে পুলিশ প্রথমে স্থানীয়দের জিঞ্জাসাবাদ করে। পুলিশ জানতে পারে দেহ উদ্ধারের আগেরদিন রাতে গুসকরা পুলিশ ফাঁড়ির কাছাকাছি একটি হোটেলে দেখা গিয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। তারপর পুলিশ গুসকরা শহর, এবং সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভিগুলির ফুটেজ সংগ্রহ করতে শুরু করে। তাতে পুলিশ লক্ষ্য করে সমসাময়িক সময়ে একটি চারচাকা গাড়ি বর্ধমানের দিকে গিয়েছিল। পরেরদিন ওই গাড়িটিকেই ফের বর্ধমানের দিক থেকে গুসকরার দিকে ফিরতে দেখা যায়। সন্দেহজনক ওই গাড়িটিকে তুরুপের তাস করে পুলিশ এগোতে থাকে। তারপর ঝাড়খণ্ড, বিহার রাজ্যের সড়কপথের একাধিক জায়গার সিসিটিভির ফুটেজে ওই একই গাড়ির ছবি ধরা পড়ে। পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর সেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ধরে গাড়ি মালিকের নাম ঠিকানা জানতে পারে। তারপর পুলিশ বিহারের সমস্তিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে এবং ওই গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনার বলি ৮৪ জন, চিন্তা বাড়াচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রাফ]
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত ব্যক্তির নাম মহম্মদ খালিদ আনোয়ার ওরফে জুগনু। সমস্তিপুর জেলার বিথান থানা এলাকার লাধ কাপাসিয়া এলাকায় তার বাড়ি। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে মহম্মদ খালিদ আনোয়ার অপরাধমূলক কাজে জড়িত। একাধিকজনের কাছ থেকে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিল। টাকা পয়সা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই তাকে খুন করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে আন্তরাজ্য মাদক ও অস্ত্র কারবারের চক্রের হদিশ মিলতে পারে বলে আশাবাদী তদন্তকারী আধিকারিকরা।