প্রসূন বিশ্বাস: শতাব্দীপ্রাচীন ফুটবল সংস্থা। দেশের সবথেকে পুরনোও বটে। সুতারকিন স্ট্রিটের আইএফএ দপ্তরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে আছে শতাব্দীপ্রাচীন ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাস। চুনী, পিকে, মান্না থেকে শুরু করে বাইচুং, সুনীল (Sunil Chhetri) ভারতীয় মহাতারকারা কলকাতায় খেলার সুবাদে জড়িয়ে গিয়েছেন আইএফএ-র সঙ্গে। এই সব তারকাদেরই ইতিহাসকে রক্ষা করার তাগিদ এতদিন অনুভব করেনি আইএফএ। বরং আইএফএতে থাকে এদের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন নথিকে সংগ্রহ না করে ঐতিহাসিক গুরুত্ব না বুঝে নির্বিচারে ফেলে দিয়েছে আইএফএ (IFA)।
ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহে। বর্তমান আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত পরিকল্পনা করেন আইএফএতে থাকা শতাব্দীপ্রাচীন বিভিন্ন নথিকে ডিজিটালাইজড করে সংরক্ষণ করবেন। যেহেতু সিআরএস আসার আগে কেমন ছিল দলবদলের এই ঐতিহাসিক দলিলগুলো, সেটাই ফুটবলপ্রেমীদের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন বর্তমান আইএফএ সচিব। পরিকল্পনা ছিল পদ্মশ্রী শৈলেন মান্না থেকে শুরু করে শুরু করে কৃশানু দে, বাইচুং ভুটিয়াদের দলবদলের সময়ের ক্লাবের নথিভুক্তকরণের যে ফর্ম তাকে ডিজিটালাইজড প্রক্রিয়া করার কাজ শুরু করেন। তারপর একে একে অন্যন্য ঐতিহাসিক রেকর্ডকে ডিজিটালাইজড করা হবে।
[আরও পড়ুন: আগামী মাসেই আমেরিকা সফরে মোদি, প্রধানমন্ত্রীকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ বাইডেনের]
কিন্তু তন্নতন্ন করে আইএফএ অপিসের বিভিন্ন ঘরে খোঁজ করা হলেও গত ১২ বছরের আগের কোনও রেকর্ড খুঁজে পাননি বর্তমান সচিব। তিনি চেয়েছিলেন, অতীতে যে দল বদলের উন্মাদনা দেখেছে কলকাতা ময়দান সেই তারকাদের আইএফএ রেজিস্ট্রেশন ফর্মগুোলো অন্তত ডিজিটাল আর্কাইভে জায়গা পাক। যা পরবর্তীকালে ফুটবল গবেষকদের কাজে লাগতে পারে। অতীতে ফুটবল গবেষণার ছাত্ররা বারবার এই শতাব্দীপ্রাচীন প্রতিষ্ঠানে এসে খালি হাতে ফিরে গিয়েছেন।
যা পাওয়া গিয়েছে, তা ২০১০ সাল থেকে সুনীল ছেত্রী, জোস ব্যারেটো, রহিম নবি, মেহতাব হুসেন, সুব্রত পালদের মতো ফুটবলারদের হাতে গোনা কিছু ফর্ম। রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ছাড়া বিভিন্ন অন্য কোনও ঐতিহাসিক নথিরও হদিশ নেই। আপাতত হাতে পাওয়া এই ফর্মগুলোকেই সংরক্ষণ করছে আইএফএ। এই আর্কাইভ করতে গিয়ে আইএফএ সচিব যথেষ্টই হতাশ, “পুরনো নথিগুলোকে এক জায়গায় এনে একটা আর্কাইভ করার চেষ্টা করেছিলাম। ভেবেছিলাম শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামী, কৃশানু দে, বাইচুং ভুটিয়ার মতো ফুটবলারদের সইয়ের ফর্মগুলো ডিজিটালাইসড করে সবার কাছে তুলে ধরতে পারব। কিন্তু শুনলাম বস্তায় ভরা ছিল। সেটা ধরে ফেলে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। পুরনো কিছু আর নেই। এই কথা শুনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল।” সঙ্গে যোগ করেন, “ব্যারেটো, সুনীল ছেত্রীদের কিছু ফর্ম পাওয়া গিয়েছে। আপাতত ভাবছি সেগুলো ডিজিটালাইজড করে তারপর ফ্রেমে করে আইএফএ অফিসে সাজিয়ে রাখা হবে।”
[আরও পড়ুন: গাজায় অগ্নিবৃষ্টি ইজরায়েলি যুদ্ধবিমানের, নিহত তিন জেহাদি কমান্ডার-সহ ১৩]
একই সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে আইএফএ টিভির কন্টেন্টেও। যা আইএফএর সোশাল মিডিয়ায় নিজস্ব মুখপত্র। এই ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার প্রাক্তন ফুটবলারদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার ধরে রাখা হচ্ছে প্রাক্তন ফুটবলারদের অডিও ভিস্যুয়াল সাক্ষাৎকার। তার কয়েকটি এপিসোড ইতিমধ্যেই শ্যুট করা হয়ে গিয়েছে। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হবে আইএফএ টিভিতে। আপাতত প্রাক্তন ফুটবলার অরুণ ঘোষের সাক্ষাকার নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই সাক্ষাৎকারগুলো সিরিজ অনুযায়ী আপলোড হবে আইএফএ টিভিতে।