গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: এতদিন নিত্যপুজোর পর বর্জ্য ফুল, বেলপাতা হয় বাড়ির পাশের জলাশয়ে, নয় পুকুরে, নদীতে ফেলে দিতেন বাসিন্দারা। সে সব আজ অতীত। এবার থেকে বসিরহাট পুরসভা এলাকার কোনও বাড়িতে পুজো হলে পুজোশেষে পড়ে থাকা ফুল, বেলপাতা বাড়ি থেকেই সংগ্রহ করবেন নির্মল বন্ধুরা। তা দিয়ে তৈরি হবে ধূপ, আবিরের মতো ভেষজ দ্রব্যাদি। উত্তরপ্রদেশের বেনারসের আদলে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে এমনই অভিনব উদ্যোগ বসিরহাট পুরসভার।
বসিরহাট পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের কঠিন বর্জ্য পদার্থ প্রসেসিং করে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশে দূষণও কমছে, অন্যদিকে পুরসভার নির্মল বন্ধুদের মাধ্যমে আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছে পুরসভাও। ইতিমধ্যে বসিরহাট পুরসভা দিল্লি থেকে পরিচ্ছন্নতার শিরোপা অর্জন করেছে। এবার ২৩টি ওয়ার্ডে নির্মল বাংলার বন্ধুরা প্রতিটা বাড়ির সামনে গিয়ে ঘণ্টা বাজাবেন। তখনই শহরবাসীরা পূজা-অর্চনার ফুল, বেলপাতা, মালা-সহ পূজার সামগ্রী নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলবেন। সেগুলো নিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় প্রক্রিয়াকরণ করে ধূপ-সহ বিভিন্ন রঙের ভেষজ আবির এবং বিভিন্ন পুজোর দ্রব্যাদি আবার নতুন করে তৈরি করা হবে।
[আরও পড়ুন: ‘আমার পিছনে লোক ঘুরছে’, ভিডিও কলে খুনের আশঙ্কার পরই ট্রেনে মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের!]
এজন্য সম্প্রতি পুরসভার টাউন হলে সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। সেখানে নয়া এই উদ্যোগের যাবতীয় রূপরেখা তৈরি হয়েছে। তাতে ঠিক হয়েছে, কঠিন বর্জ্য পদার্থ দিয়ে যেমন বিভিন্ন উপকরণ তৈরি হচ্ছে, তেমনই পুজোর অন্যান্য জিনিসপত্রকেও রিসাইক্লিং করে ফের ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে। এ বিষয়ে বসিরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান অদিতি মিত্র বলেন, ‘‘আমরা কঠিন বর্জ্য পদার্থ থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছি। বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন হয়েছে। এবার নতুন করে আমরা পুজোর ফেলে দেওয়া বস্তু দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি। ওয়ার্ডবাসী পুজোর ফুল-সহ বিভিন্ন সামগ্রী পুকুরে ফেলতেন। তা থেকে পুকুরের জল দূষিত হয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ত। এবার সেই সামগ্রীগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে। আগামিদিনে এই উদ্যোগ সঠিকভাবে নতুন কর্মসংস্থানের দিশা দেখাবে।’’