সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কের ঝড়ের মধ্যেই সম্প্রচারিত হল বিবিসির তথ্যচিত্র মোদি: দ্য ইন্ডিয়া কোয়েশ্চেনের (Modi: The India Question) দ্বিতীয় পর্ব। শেষ পর্বেও মোদি বিরোধিতায় সরব ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা। দ্বিতীয় পর্বে ৩৭০ ধারা বিলোপ, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সাফ দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এক নতুন ও সমৃদ্ধ ভারত গড়ে তোলার বার্তা দিলেও ধর্মীয় ভেদাভেদ বাড়িয়ে তুলেছেন। এছাড়াও গোধরা হিংসার সমস্ত মামলা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অব্যাহতি দিলেও এই বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় বলে দাবি করেছে বিবিসির তথ্যচিত্র। যদিও ভারতে দ্বিতীয় পর্বটি সম্প্রচারিত হয়নি।
মঙ্গলবার বিশ্বজুড়ে মুক্তি পায় বিবিসির (BBC) তথ্যচিত্র। প্রথম পর্বে দাবি করা হয়েছিল, গুজরাট হিংসার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ভারতীয় মুসলিমদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর, এমনটাও দাবি করা হয়। দ্বিতীয় পর্বেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তথ্যচিত্রে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গোমাংস খাওয়া নিয়ে মুসলিমদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে বিজেপি সরকার। উদাহরণ হিসাবে আলিমুদ্দিন আনসারির হত্যার ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে গোরক্ষকদের হাতে খুন হন তিনি। হত্যাকারীদের সমর্থন করেছিলেন এক তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, এমনই দাবি করা হয়েছে তথ্যচিত্রে।
[আরও পড়ুন: নদী থেকে উদ্ধার একই পরিবারের সাতজনের দেহ, খুন নাকি আত্মহত্যা? ধন্দে পুলিশ]
বিবিসির মতে, রাতারাতি সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করে অঙ্গরাজ্য হিসাবে জম্মু-কাশ্মীরের স্বীকৃতি কেড়ে নেওয়া হয়। তার ফলে এক মাসের মধ্যে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষকে আটক করে রাখা হয়। দেশের বাকি রাজ্যগুলি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কাশ্মীর। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কোনও খবর দেশের মানুষের কাছে পৌঁছত না বলেই দাবি করেছেন ক্রিসটোফে জেফ্রোলে নামে এক ভারত বিশারদ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গেও মোদিকে বিঁধেছে এই তথ্যচিত্র।
এই আইন প্রণয়নের পরেই বিক্ষোভ শুরু হয় ভারতের নানা প্রান্তে। নানা রাজ্যের বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয় অন্তত ৫ জনের। এই ঘটনার কারণ হিসাবে তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে, “কট্টর হিন্দু সমর্থকরা মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষকে হুমকি দিয়েছেন।” তথ্যচিত্রে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নেই ভারতে। নিজেদের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে শাস্তি পেতে হচ্ছে তাঁদের। মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে লাগাতার বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।” অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার তরফেও এই দাবিকে সমর্থন করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে বিবিসি।