সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “নারী তুমি অর্ধেক আকাশ। ঈশ্বরের ছায়া তুমি… তোমারই স্নেহসুধায় পৃথিবীর বুকে সৃজন হয় জীবনের…”, নারীর সাহচর্যেই সুন্দর সংসার, পুরুষের জীবন মধুময়, একথা অনেকেই বলে থাকেন। এবং তা সংসারের অন্যান্য ক্ষেত্রেও যেন খেটে যায়। রবিবার মেন ইন ব্লুয়ের বিশ্বজয় করা হল না ঠিকই। কিন্তু গোটা টুর্নামেন্টে তাঁরা যা দাপট দেখিয়েছেন, তাতে সর্বদা পাশে ছিলেন সেই নারীরা। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমর্থন করে গিয়েছেন। আর এই দুঃসহ মুহূর্তেও তাঁরাই হয়ে উঠবেন একমাত্র সান্ত্বনা। তাঁদের দিকেও না হয় আজ একটু ফোকাস থাক।
তুমি স্বপ্ন দেখো, পাশে আছি… – দিনের শেষে হাত শক্ত করে ধরে এই শব্দগুলো বলার মানুষ যাঁদের কাছে রয়েছে, তাঁরাই জানেন সঙ্গীর সাহচর্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ? বলা হয়, প্রতিটা সফল পুরুষের নেপথ্যেই নারীর হাত থাকে। চলতি বিশ্বকাপ মরশুমে টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়ারদের সঙ্গে যেভাবে তাঁদের স্ত্রীদের দেখা গিয়েছে, তাতে চর্চায় উঠে এসেছেন তাঁরাও। একদিকে বাইশ গজের মাঠে ব্যাট-বলের খেল, অন্যদিকে গ্যালারিতে বসে থাকা জীবনসঙ্গীরাই যেন তাঁদের ‘চাঙ্গায়নী সুধা’ জুগিয়ে গিয়েছেন।
সবথেকে বেশি চর্চিত বিরুষ্কা (Virat Anushka) জুটি। বরাবরই তাঁরা লাইম লাইটে। একটা সময়ে বিরাটের খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য অনুষ্কা শর্মাকে কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি। স্ত্রী হিসেবে তাঁকে ‘অপয়া’ কটুক্তিও শুনতে হয়েছে! তবে এত আক্রমণ হওয়া সত্ত্বেও দমে যাননি অনুষ্কা। বরং বরাবর বিরাটের পাশে থেকেছেন তাঁর সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে। একবার দরাজ গলায় বিরাট বলেছিলেন, “বিয়ের পরই অধিনায়ক হিসেবে উন্নতি করেছি।” আর তেইশের বিশ্বকাপে যখন ‘কিং ইজ ব্যাক’ তাঁর পুরনো ফর্মে, বিজয়রথ ছুটিয়েছেন, তখনও স্বামীর হয়ে গ্যালারিতে ‘চিয়ার লিডার’ হিসেবে দেখা গিয়েছে অনুষ্কাকে।
একইভাবে গোটা সিরিজে রোহিত শর্মার পাশে দেখা গিয়েছে স্ত্রী ঋতিকাকে (Rohit-Ritika)। বাইশ গজে টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক হিসেবে স্বামী যখন খেল দেখাচ্ছেন, তখন গ্যালারিতে বসে থাকা ঋতিকার অ্যাড্রিনালিন রাশ ফুটে উঠেছে চোখেমুখে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তারকা ব্যাটসম্যানের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন দীর্ঘদিনের বান্ধবী ঋতিকা। আর ঠিক তার পর থেকেই ‘লেডি লাক’-এ ভর করে বাইশ গজে রানের ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছেন রোহিত।
তেইশের বিশ্বকাপে রবীন্দ্র জাদেজা যেন ছিলেন টিম ইন্ডিয়ার ‘পরশ পাথর’। ব্যাট হাতে হোক কিংবা বোলিংয়ে বা ফিল্ডিংয়ে, অলরাউন্ডার হিসেবে, যেখানে হাত দিচ্ছেন সোনা ঝরছে! ফাইনাল ম্যাচে সেই দৃশ্য যদিও অধরা! ক্রীড়ামহলে জাদেজার এক্স ফ্যাক্টর নিয়ে যখন দারুণ চর্চা। তখন তাঁর রাজনীতিক স্ত্রী রিভাবাও স্বাভাবিকভাবেই লাইমলাইটে। স্ত্রীর হয়ে রাজনীতির ময়দানে প্রচারে নেমে বিতর্কের শিকার হয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অলরাউন্ডার। স্ত্রীয়ের রাজনৈতিক কেরিয়ারের জন্য পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েও জাদেজা যেন রিভাবার সাপোর্ট সিস্টেম। রিভাবাও তেমনই কখনও গ্যালারিতে উপস্থিত থেকে স্বামীর মনোবল বাড়িয়েছেন। আবার কখনও বা তাঁকে ময়দানে দাঁড়িয়ে স্বামী জাদেজার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে দেখা গিয়েছে।
“স্ত্রীই আমার সবথেকে বড় সাপোর্ট”- বিশ্বকাপের আগেই দরাজ গলায় ঘোষণা করেছিলেন কে এল রাহুল। দীর্ঘদিনের বান্ধবী আথিয়া শেট্টিকে বিয়ের পরই নাকি খেলার প্রতি আরও মনোযোগ বেড়েছে তাঁর। চলতি বিশ্বকাপের মরশুমেও রাহুলের পারফরম্যান্সই তাঁর প্রমাণ। ক্রিকেটদুনিয়ার তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যেমন ভক্তদের কৌতূহলের অন্ত নেই, তেমনই তাঁদের জীবনসঙ্গীদের উপরও বরাবর নজর থাকে।