সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার ইউক্রেন (Ukraine) সীমান্তে বিশেষ বাহিনী পাঠাতে চলেছে বেলারুশ। ফলে সাঁড়াশি চাপে পড়তে চলেছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি! এমনটাই খবর রয়টার্স সূত্রে।
[আরও পড়ুন; রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ২০০টি বোমা নিষ্ক্রিয় করার পুরস্কার, জেলেনস্কির থেকে পদক পেল কুকুর]
ইউক্রেন যুদ্ধে শুরু থেকেই রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে বেলারুশ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। বেলারুশ সীমান্ত থেকে কিয়েভে হামলা চালিয়েছে পুতিনের বাহিনী। তবে এখনও সরাসরি যুদ্ধে নামেনি মিনস্ক। এহেন পরিস্থিতিতে রয়টার্স সূত্রে খবর, ইউক্রেনে সরাসরি আঘাত হানার উদ্দেশে দক্ষিণ ইউক্রেন সীমান্তে বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী পাঠাতে চলেছে বেলারুশ। ফলে সাঁড়াশি চাপে পড়তে চলেছেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
এদিকে, ইউক্রেনে হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বেলারুশ সেনাপ্রধান জেনারেল স্টাফ ভিক্টর গুলেভিচ। তাঁর বক্তব্য, দু’দেশের সঙ্ঘাতের মাঝখানে আমেরিকা এবং ন্যাটো দেশগুলি ইউক্রেনের সীমান্তে তাদের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। তাতে লাগাম টানতেই বেলারুশ সরকার ইউক্রেন সীমান্তে বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করছে। ওই পদক্ষেপ অনেকটাই সাবধানী হওয়ার জন্য। সরাসরি আক্রমণ বা সঙ্ঘাতের উদ্দেশ্যে নয়।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বেলারুশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তের দক্ষিণ দিকে থাকা বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও ওই সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বেলারুশ সরকারের আরও দাবি, ইউক্রেন সরকার বেলারুশ সীমান্তের কাছে ২০ হাজার সশস্ত্র সেনা মোতায়েন করেছে। তার প্রতিক্রিয়া জানাতেই পালটা সেনা পাঠাচ্ছে বেলারুশ। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সরাসরি সঙ্ঘাতে নামার কোনও ইচ্ছা তাদের নেই। বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভিক্টর ক্রেনিনও একই মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। পালটা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে প্রত্যাঘাত হানে ইউক্রেনীয় ফৌজ। তখনই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে যুদ্ধের প্রথমদিনই রাশিয়ার ছয়টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছেন এক ইউক্রেনীয় পাইলট। শুরু থেকেই এভাবে টানা প্রত্যাঘাত চালিয়ে গিয়েছে কিয়েভের সেনা।
এহেন পরিস্থিতিতে পুতিন যে চাপের মুখে রয়েছেন তা স্পষ্ট। যুদ্ধের উত্তেজনা, আমেরিকা ও ন্যাটোর সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা এবং নিজের বাহিনীর ‘বিফলতা’র ফলে মানসিক ধাক্কা খেয়েছেন পুতিন। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার উপরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ওয়াশিংটন ও পশ্চিমী দেশগুলি। কয়েক সপ্তাহ আগেই পুতিনের দুই মেয়ের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পুতিনের ‘প্রেমিকা’ কাবেবার নামও। ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে পুতিনের উপর চাপ বাড়াতেই এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মাঝে রুশ রণতরী ধ্বংস হওয়ার ঘটনায় সেই চাপ যে আরও বাড়ল তা বলাই বাহুল্য। ফলে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে এবার হামলা চালিয়ে কিয়েভকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করতে পারেন পুতিন বলেই মনে করা হচ্ছে।