অভিরূপ দাস: মাথাজোড়া চকচকে টাক। কিন্তু সেখানে চুল গজাতে গিয়েই বিপত্তি। ইন্দ্রলুপ্তে কেশ গজানো তো দূর! খালি হয়ে খেল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এরপরই প্রসাধন সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে অভিযোগ জানালেন বেলঘড়িয়ার (Belghoria) বাসিন্দা শ্যামলকুমার রায়। যদিও অভিযোগ পাওয়ার পর দেখা যায়, আদতে ওই সংস্থার কোনও হদিশই নেই।
মাথাজোড়া চকচকে টাক শ্যামলবাবুর। এমন সময়ে পূর্ব কলকাতায় (Kolkata) একটি সংস্থার খোঁজ পান তিনি। ‘রিচ ফিল হেলথ অ্যান্ড বিউটি’ নামক ওই সংস্থা কথা দেয় মাথায় চুল গজিয়ে দেবে। তার জন্য এই মুহূর্তে কোনও টাকাও দিতে হবে না। শ্যামলবাবুর দাবি, “ওই সংস্থা আমাকে জানায় আপাতত নাম রেজিস্টার করলেই হবে।ঋণ প্রদানকারী একটি সংস্থার সঙ্গে নাকি তাদের গাঁটছড়া আছে। তারাই আমার অস্ত্রোপচারের খরচ ব্যয় করবে। আমি মাসে মাসে সুদ ছাড়াই ওই ঋণ শোধ করব।” তারপর? অস্ত্রোপচার হয়নি। চুলও গজায়নি। কিন্তু টাকা চলে যাচ্ছে শ্যামলবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে। ইতিমধ্যেই দু কিস্তিতে দশ হাজার টাকা কেটে নিয়েছে ওই ঋণপ্রদানকারী সংস্থা। জিজ্ঞেস করতে গেলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওই প্রসাধন কোম্পানি তাদের কাছ থেকে চুল গজানোর অস্ত্রোপচার বাবদ ৪৪ হাজার টাকা নিয়েছে। সেই টাকাই তারা শ্যামলবাবুর ব্যাঙ্ক থেকে কাটছে। বছর পঞ্চাশের শ্যামলবাবুর প্রশ্ন, “অস্ত্রোপচারই তো হল না। টাকা কেন নিল? আসলে ওই সংস্থা জোচ্চুরি করে টাকা তুলে নিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: OMG! রক্তে ম্যাজিক মাশরুম গজিয়ে উঠেছে ব্যক্তির! কী ব্যাখ্যা চিকিৎসকদের?]
রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে কোনও অভিযোগ জমা পড়লে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দু’পক্ষকেই ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু ‘রিচ ফিল হেলথ অ্যান্ড বিউটি’ নামক ওই সংস্থাকে ডাকতে গিয়েই মাথায় হাত স্বাস্থ্য কমিশনের। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আসলে ওই সংস্থার কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য কমিশনে সাধারণত চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচের বিচার হয়। তবে এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনা এই প্রথম। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে বলেছি অবিলম্বে বিধাননগর কমিশনারেটকে লিখিত আকারে অভিযোগ দিন। প্রসাধনী সংস্থার জালিয়াতি এই প্রথম নয়, এর আগেও ফর্সা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ভুয়ো ক্রিম গছিয়ে দিয়েছে। এরপর রোগীর চর্মরোগের শিকার হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের কথায়, মুহূর্তে চুল গজিয়ে দেবে বলে এমন ব্যাঙের ছাতার মতো নানান কোম্পানি খুলেছে। সেসব কোম্পানিতে যাওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।