সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগে পড়ুয়াদের হজরত মহম্মদের বিতর্কিত কার্টুন দেখানোর জন্য ফ্রান্সের এক শিক্ষককে নৃংশসভাবে খুন হতে হয়েছিল। এর জেরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মানুয়েল ম্যাক্রোঁ যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে সরগরম বিশ্ব রাজনীতি। ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন মুসলিম বিশ্বের দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা। ঠিক এই সময়েই হজরত মহম্মদের সেই একই কার্টুন দেখিয়ে বেলজিয়ামে বরখাস্ত হলেন একজন স্কুল শিক্ষক। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই ফের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলস (Brussels) জেলার মোলেনবিক (Molenbeek) এলাকার একটি স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ছোট কম্পিউটার নিয়ে এসে ক্লাস ফাইভ ও সিক্সের পড়ুয়াদের ফ্রান্সের শিক্ষক মহম্মদের যে বিতর্কিত কার্টুনটি দেখিয়ে খুন হয়েছিলেন তা দেখান। কীভাবে এর জন্য ওই ফরাসি শিক্ষককে খুন হতে হয়েছে তার বিবরণ দেন। এই খবর বাইরে বের হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়। যদিও তাঁর নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
[আরও পড়ুন: কানাডার রাস্তায় তরোয়াল হাতে একের পর এক পথচারীকে কোপ আততায়ীর, মৃত ২]
এদিক অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি স্বীকার করলেও এই ঘটনার সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করা করেছেন স্থানীয় পুরসভার মেয়র। তাঁর কথায়, ওই শিক্ষক ছোট ছোট শিশুদের অশ্লীল কার্টুন দেখাচ্ছিলেন বলে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেছিলেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগের প্রমাণ মেলায় ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অক্টোবরের ১৬ তারিখ প্যারিসে এক শিক্ষকের মাথা কেটে খুন করে এক চেচেন মুসলিম জঙ্গি। তাঁর ‘অপরাধ’, পড়ুয়াদের বাক স্বাধীনতার পাঠ দিতে হজরত মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনাকে ‘ইসলামিক মৌলবাদের’ স্বরূপ বলে তোপ দেগেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওই শিক্ষককে ‘নায়ক’ বলে মন্তব্য করেন। হামলার ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ ও ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী হামলা’র মতো শব্দ ব্যবহার করেছেন তিনি। তারপর থেকেই আসরে নেমে পরে মুসলিম দেশগুলি। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘মুসলিম ভীতি’ জাগিয়ে তোলার অভিযোগ এনে তুমুল হইচই শুরু করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান।