স্টাফ রিপোর্টার: ৪২টি বোলেরো এসে গিয়েছে। আসছে ৩০০টি বাইক (Bike)। ক্রেতা রাজ্য বিজেপি। খরচ প্রায় ৬ কোটি টাকা। সামনে পঞ্চায়েত। এক বছর বাদে লোকসভা। দুই নির্বাচনকে সামনে রেখে এতগাড়ি ও বাইক কেনা হল। ৪২টি লোকসভা আসনে একটি করে বোলেরো দেওয়া হবে। ২৯৪ টি বিধানসভা আসনের জন্য ৩০০ বাইক। পঞ্চায়েতের ৬০ হাজার আসনের অধিকাংশেই যখন প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, তখন এত গাড়ি কী হবে? এ প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর বক্তব্য,”দলের প্রয়োজনে কিনতে হচ্ছে। দল বড় হয়েছে। তাই যোগাযোগ এবং নির্বাচনী কাজের জন্য এসব দরকার।” গেরুয়া শিবিরের একাংশের বক্তব্য, বুথ কমিটি গড়ার লোক নেই। আসন কতগুলি দখলে আসবে তা নিয়েও নিশ্চয়তা নেই। জেলায় জেলায় সংগঠন চালানোর খরচের বিল জমা দিয়েও অনেক সময় অর্থ সময় মতো মিলছে না বলে অভিযোগ তুলছে দলের নিচুতলার নেতারা। অথচ, লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোটি-কোটি টাকার গাড়ি আসছে বঙ্গ বিজেপি দপ্তরে। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে এই গাড়ি কেনা নিয়ে রাজ্য নেতাদের নিশানা করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পের খাবারের বিল নিয়ে ‘দুর্নীতি’, পদত্যাগ পঞ্চায়েত প্রধানের]
সূত্রের খবর, গত একুশের বিধানসভা ভোটের আগেও ২৯৪টি বাইক এসেছিল। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই বাইকগুলির মধ্যে ৩০টি পাওয়া গেলেও ২৬৪টি বাইকের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। গাড়ির পিছনে এত অর্থ ব্যয় করা নিয়ে দলের বিক্ষুব্ধ শিবিরের নিশানায় রাজ্য নেতারা। বিক্ষুব্ধ শিবির প্রশ্ন তুলেছে, এই কোটি কোটি টাকা খরচ করে গাড়ি কেনা হচ্ছে, অথচ দলের বহু কর্মীরা অর্থাভাবে রয়েছেন। তাঁদের সাহায্যের জন্য কেন নেতাদের পাওয়া যাচ্ছে না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরনো এক বিজেপি নেতার অভিযোগ, ভোটের কাজের জন্য কোটি টাকা খরচ করে গাড়ি কেনা হচ্ছে। অথচ, বিজেপির রাজ্য দপ্তরে নতুন করে কোনও কর্মী নেওয়া হয়নি। সকলকেই সল্টলেকের নয়া অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য দপ্তরে চা—জল দেওয়ার লোক নেই। পুরনো নেতারা কার্যত আসাই ছেড়ে দিয়েছেন।
রাজ্য কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, “আমরা তো পার্টি অফিসে আসাই ছেড়ে দিয়েছি। অফিস সম্পাদককেও সবসময় পাওয়া যায় না।’’ বিজেপি সূত্রে খবর, ৪২টি গাড়ির এক একটির দাম ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আর ৩০০টি বাইকের এক একটির দাম ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। খরচ হচ্ছে ৬ কোটি টাকা। দলের এক আদি নেতার কথায়, “পার্টি এখন কর্পোরেট ধাঁচে চলছে। বিলাসবহুল হোটেল—রিসর্টে রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক, চিন্তামন্থন শিবির হচ্ছে। ব্যালট বাক্সে কতটা প্রভাব পড়ে সেটাই দেখার। ২০১৯—এর লোকসভা ভোটের সময় পার্টি এত কর্পোরেট ছিল না। কিন্তু ১৮টি আসন আমরা পেয়েছিলাম।’’