স্টাফ রিপোর্টার: সূচনা পর্বে শিবির শুরুর প্রথম দিনেই দু’লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছিল। শুক্রবার, বাংলার এক কোটি ঘরে পৌঁছে গেল ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar)। অর্থাৎ, অভিযানের এই আঠারো দিনে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের এই বিপুল সংখ্যক অধিবাসী রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের চাহিদা পূরণের আবেদন জানিয়েছেন। নানা প্রকল্পের সুবিধা চেয়েছেন সরকারের কাছে। এ পর্যন্ত যা খবর, তাতে আবেদনের ভিত্তিতে এগিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পই। ইতিমধ্যে এই দ্বিতীয় পর্যায়েই শিবিরে খুলে দেওয়া হয়েছে ‘মানবিক প্রকল্প’ কাউন্টারও। যেখান থেকে আলাদা করে বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার মতো নানা সুবিধা মিলবে।
সরকারি হরেক প্রকল্পের সুবিধা যাতে রাজ্যবাসীর চৌকাঠে পৌঁছে দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ‘দুয়ারে সরকার’ অভিযান শুরু করেছেন। পয়লা ডিসেম্বর থেকে চারটি পর্যায়ে টানা দু’মাস রাজ্যের কোণে কোণে এর ক্যাম্প বসবে। প্রতিটি ব্লকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর, সব মিলিয়ে ২২ হাজার শিবির। মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, “এবার মানুষের দুয়ারে সরকার যাচ্ছে। যার যা প্রয়োজন, যে কাজটা হয়নি, দয়া করে গিয়ে সেই পরিষেবাগুলো নিয়ে নিন।”
এ নিয়ে অবশ্য বিজেপি নানা সময় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। কিন্তু মানুষের কাছে এভাবে সরাসরি সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদও জানিয়েছে নানা মহল। প্রথমে প্রশাসনকে জেলায় নিয়ে যাওয়া এবং এখন সরকারকে মানুষের দুয়ারে নিয়ে যাওয়ার মতো অভিনব ভাবনার সুবাদে সরকারি পরিষেবা তৃণমূল স্তরে পৌঁছনো সহজ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারাও। তাঁদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এক কোটি মানুষ এই শিবিরগুলিতে পা রেখেছেন।
[আরও পড়ুন: সৌগত রায়কে ফোন, জিতেন্দ্রর পথ ধরে তৃণমূলেই কালনার ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়ক বিশ্বজিৎ]
নানা আবেদন জানিয়ে নাম নথিভুক্ত করেছেন। গড়ে সদস্যের পরিবার ধরলে ওই এক কোটি মানুষ যদি সঠিক পরিষেবা পান, তাহলে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত পরিবারের অন্যরাও উপকৃত হবেন ধরে নেওয়া যায়। এবং সাফল্যের নিরিখে এটা কম কিছু নয়। বিশেষত একুশের বিধানসভা ভোটের (Assembly Election 2021) প্রেক্ষিতে ব্যাপারটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সরকারের আরও কাছে মানুষকে এনে দেওয়ার কাজটা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শিবিরে দেখা যাচ্ছে, বহু মানুষ ক্ষোভপ্রকাশ করছেন, বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। তা সত্ত্বেও সরকারের কাছে মানুষ এসেছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের পর্যবেক্ষণ, এটাই ভোটের আগে কাজে দেবে। মানুষকে সরাসরি ভোটমুখী করে দেবে। ভোটের আমেজ তৈরি করে দেবে। সরকারের আশা, তারা ১০০ শতাংশ মানুষের হাতে অতি দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম। এবং তা এই দু’মাসের কার্যক্রমের মধ্যেই। সরাসরি যার সদর্থক প্রতিফলন মিলবে ভোটের বাক্সে। একটি নির্দিষ্ট পরিষেবা পেতে কী কী নথির প্রয়োজন, দুয়ারে সরকারের প্রথম দফাতেই তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে পরিষেবা প্রদানের কাজ চলছে দ্বিতীয় দফায়। তৃতীয় পর্যায়ে টানা পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে। চতুর্থ পর্যায় নির্ধারিত ‘র্যাপ আপের’ জন্য। কোথাও কেউ বাকি থেকে গেল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।