সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা দখলের লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তেমন ছুৎমার্গ করেনি বিজেপি (BJP)। তৃণমূল, সিপিএম তথা কংগ্রেস থেকে একের পর এক নেতাকে দলে নিয়েছে তারা। গেরুয়া শিবিরের হয়ে টিকিটও পেয়েছেন বহু দলবদলু। নয় নয় করে সংখ্যাটা ৫০-এরও বেশি। এদের মধ্যে সবাই অন্য দলের জনপ্রতিনিধি না হলেও, কোনও না কোনও দলীয় পদে ছিলেন প্রত্যেকেই। অনেকে আবার তৃণমূলে টিকিট না পাওয়ার আশঙ্কায় ভোটের একেবারে আগে আগে দলবদল করে নাম লিখিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। মোট কথা টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে আদি বিজেপির থেকে অনেকাংশেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নব্য বা দলবদলু বিজেপিদের। কিন্তু বাংলার ভোটচিত্র তথা অতীত ইতিহাস বলছে, এরাজ্যের মানুষ দলবদলুদের তেমন পছন্দ করেন না। গত তিনটি নির্বাচনের খতিয়ান বলছে, এরাজ্যের বিধানসভা ভোটে দলবদলুদের সাফল্যের হার ৫০ শতাংশেরও কম।
২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মোট ২৭ জন দলবদলু প্রার্থী হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে জয়ী হন মাত্র ১২ জন। এই ২৭ জনের মধ্যে তৃণমূলই (TMC) প্রার্থী করেছিল ২৩ জনকে। এর মধ্যে জয়ী হন মাত্র ১০ জন। কংগ্রেসের দুই দলবদলু প্রার্থীই অবশ্য জয়ী হন। অন্যান্যরা প্রার্থী করেছিল ২ দলবদলুকে। তাঁরা কেউই জয়ী হননি।
[আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে ‘বহিরাগত’দের একাই রুখবেন মমতা, প্রকাশ্যে ‘ফাইটার দিদি’র দ্বিতীয় ভিডিও]
তার আগে ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনেও দলবদলুদের অবস্থা একইরকম ছিল। সেবারে রাজ্যে দলবদল করে প্রার্থী হয়েছিলেন মোট ২১ জন। এদের মধ্যে মাত্র ৮ জন জয়ী হন। তার আগে ২০০৬ সালের ভোটেও তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেননি দলবদলুরা। সেবারে মোট ৪৮ জন দলবদলু বিভিন্ন দলের হয়ে প্রার্থী হন। এদের মধ্যে মাত্র ১৫ জন সাফল্য পেয়েছিলেন। সেবারে তৃণমূলের ১২ জন এবং কংগ্রেসের ১৪ জন দলবদলু প্রার্থীর মধ্যে মাত্র একজন করে জয়ী হন।
[আরও পড়ুন: ‘কেউ যেন হেঁটে ফিরে যেতে না পারে’, তৃণমূলী ‘গুন্ডা’দের পালটা দেওয়ার নিদান দিলীপের]
এই পরিসংখ্যান স্বভাবতই বাড়তি চিন্তায় রাখবে বিজেপিকে। কারণ, রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দলবদলুকে প্রার্থী তাঁরাই করেছে। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, ২০০৬ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রাজ্যের যে নির্বাচনগুলি হয়েছে, তার চরিত্র একুশের নির্বাচনের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এবারে মানুষ ভোট দেবেন ‘আসল পরিবর্তনে’র লক্ষ্যে। এক্ষেত্রে প্রার্থী কে হলেন, সেটা জরুরি নয়। তাই আগের নির্বাচনগুলির সঙ্গে এবারের ভোটের (West Bengal Assembly Elections) তুলনা করে লাভ নেই।