বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: টানা ছুটি মিলতেই পাহাড়মুখো (Hills) ভ্রমণরসিক বাঙালি। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের হোটেল তো বটেই। হোমস্টেগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়। ল্যান্ডরোভার্সের টানে অনেকে ‘হিমালয়ান সাফারি’-র জন্য পাড়ি জমিয়েছেন সান্দাকফু, মানেভঞ্জনে। ট্রেকিংয়েও লম্বা লাইন। থিকথিকে ভিড় চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেনে। পা রাখার জায়গা মিলছে না ম্যালে। আশপাশের চা বাগানগুলোতেও একই ছবি।
পর্যটন সংস্থা ও হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ১ মে পর্যন্ত নয়। ১৫ জুন পর্যন্ত বেশিরভাগ হোটেল এবং হোমস্টে ফুল বুকিং আছে। করোনাকালেরও দীর্ঘ সময় পর পর্যটকের ঢল নামতে খুশি পাহাড়বাসী। পাহাড়ের পর্যটন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে আপ্লুত অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম’-এর আহ্বায়ক রাজ বসু। তিনি জানান, কয়েক বছর পর গ্রীষ্মের মরশুমে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে পর্যটকদের এত ভিড় নজরে পড়ছে। হোটেল ও হোমস্টেতে প্রায় ঠাই নেই দশা হয়েছে।
পর্যটন সংস্থাগুলোর দাবি, এই মূহূর্তে পাহাড়ে দেড় লাখের বেশি পর্যটক আছে। শুক্রবার বনধ সত্ত্বেও প্রচুর পর্যটক পৌঁছেছেন। শনিবারের সংখ্যা দ্বিগুণ ছিল। তিনদিনের ছুটি মেলায় ওই পরিস্থিতি বলেই মনে করছেন দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভিড় বাড়লেও পাহাড়ে হোটেল ও হোমস্টেতে থাকার জায়গা মিলবে। তাই কোনও পর্যটক যেন ফিরে না যান সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ঘুরতে যান নিশ্চিন্তে, গোয়া সৈকতে এবার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে AI]
হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে সাড়ে পাচশো হোটেল রয়েছে। তারমধ্যে সাড়ে তিনশো হোটেল শৈল শহরেই পেয়ে যাবেন পর্যটকরা। পঞ্চাশজনের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন দুই জেলায় এমন হোটেল রয়েছে ১১২টি। থ্রি স্টার টাইপের বিলাসবহুল হোটেল সংখ্যা ২৫টি। বড়-মাঝারি হোটেলে প্রায় ৭৫ হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও কিছুটা সস্তার মধ্যবিত্তদের পছন্দের ছোট হোটেল যেখানে প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক থাকতে পারবেন।
১৫ জুন পর্যন্ত হোটেলের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং আছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে অন্তত আঠারোশো হোমস্টে রয়েছে। সেখানেও একই ছবি। দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না জানান, গত বছর গ্রীষ্মেও রাজ্যের বেশিরভাগ পর্যটক ছুটি কাটাতে সিকিমে ছুটেছেন। অনেকদিন পর এবার স্বাভাবিক ছন্দে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়।
সিতং-এর হোমস্টে মালিক দীপক ছেত্রী বলেন, “ভিড় দেখে থাকার জায়গা বাড়িয়েছি। মে মাসের পুরোটাই বুকিং আছে। এপ্রিলের বুকিং চলছে।” শুধু সিতং কেন? লাটপাঞ্চার, সুখিয়া, বিজনবাড়িতেও একই ছবি। ঘুম, মিরিক, কার্শিয়াং, দুধিয়া, তিনধারিয়া এলাকার হোটেল ও হোমস্টেগুলোতেও পর্যটকরা যাচ্ছেন। দার্জিলিংয়ের হোটেল মালিক ছিতেন প্রধান বলেন, “এবার পাহাড়ের আবহাওয়া মনোরম। কড়া ঠান্ডা নেই। ট্রেকারদের ভিড় এবার অনেক বেশি। এছাড়াও অনেকেই আসছে হিমালয়ান কার সাফারির মজা নিতে।”