shono
Advertisement

Breaking News

৪০ দিন লুকিয়েও শেষরক্ষা হল না, বিহারের সাংবাদিক খুনে চন্দননগর থেকে গ্রেপ্তার তিন দুষ্কৃতী

ধৃতরা সকলেই বিহারের বাসিন্দা।
Posted: 04:21 PM Jul 01, 2022Updated: 04:21 PM Jul 01, 2022

দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: চন্দননগর কমিশনারেটের বড়সড় সাফল্য। বিহারের (Bihar) বেগুসরাইতে সাংবাদিক খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে চন্দননগর থেকে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা জেরার মুখে দোষ স্বীকার করেছে বলেই পুলিশের দাবি।

Advertisement

বিহারের বেগুসরাই জেলার সাঁকো গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক সুভাষকুমার গুপ্তা গত ২০ মে গ্রামে এক বিয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে চার দুষ্কৃতী মহিলাদের উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য ও কুৎসিত ইঙ্গিত করছিল। ঘটনার প্রতিবাদ করেন সুভাষ। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বচসা বেঁধে যায় সুভাষের। বচসা চলাকালীন হঠাৎই দুষ্কৃতীরা গুলি করে সুভাষকে খুন করে পালিয়ে যায় বলে খবর। এই ঘটনায় মৃত সাংবাদিকের পরিবার বিহারের বকরি থানায় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে বিহার। মৃতের পরিবার ও বন্ধুরা দাবি করে, সম্প্রতি বালি মাফিয়াদের অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে খবর প্রকাশ্যে আনার কারণে রোষানলে পড়ে সুভাষ। তার জেরে খুন। এদিকে বিহার পুলিশ অভিযুক্তদের শনাক্ত করলেও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ভিন রাজ্যে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।

[আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্রপতি ভোটে দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ের সম্ভাবনা বেশি’, মমতার মন্তব্যে জল্পনা]

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি বিদিতরাজ বুন্দেশ জানান, বিভিন্ন রাজ্যে পালিয়ে বেড়ানোর পর তিন দুষ্কৃতী হুগলির বলাগড়ে এসে গা ঢাকা দেয়। তিনদিন আগে ওই তিন দুষ্কৃতী চন্দননগর স্ট্র্যান্ডের ধারে গঙ্গার ঘাট এলাকায় আত্মগোপন করে। স্থানীয় এক ব্যক্তির অচেনা ওই তিন যুবকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তিনি চন্দননগর থানার পুলিশ আধিকারিকদের বিষয়টি জানান। ওই ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আইসি শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চন্দননগরের গঙ্গার ধার থেকে ৩ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম রোশন কুমার, প্রিয়াংশু কুমার ও সৌরভ কুমার। তিনজনেরই বাড়ি বিহারের বেগুসরাই জেলার খাগারিয়া থানা এলাকায়। ডিসিপি বিদিত রাজ বুন্দেশ জানান, পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য ধৃতরা প্রথমে তাদের আধার কার্ড দেখিয়ে ভুল ঠিকানা ও তথ্য দেয়। তারা জানায়, কাজের খোঁজে তারা বিহার থেকে পশ্চিম বাংলায় এসেছে। কিন্তু পুলিশি দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত ধৃতরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সাংবাদিক খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। এরপরই চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্ত তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে বিহারের সাংবাদিক খুনের ঘটনায় এই তিন দুষ্কৃতী জড়িত রয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ভুয়ো আধার কার্ড, চারটি মোবাইল ফোন দিল্লি মেট্রোর একটি টোকেন ও বেশ কিছু টাকা উদ্ধার করেছে। চন্দননগর থানা ধৃতদের বিরুদ্ধে একটি কেস শুরু করেছে। নম্বর ১৫৩/২২। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫/ ৪৬৮/ ৪৭৩/ ৩২০বি ধারায় কেস শুরু করেছে।

এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ৪০ দিন যে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে বেরাল তাদের খরচ কোথা থেকে আসত? ধৃতদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা কি সাহায্য করেছিল? দুষ্কৃতীরা ফোনে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই বিষয়ে বিহার পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে চায় নি। পাশাপাশি চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন একজন স্থানীয় ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজকে এই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তাই তাদের আবেদন কোন ব্যক্তির আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশকে যেন সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তি বিষয়টি জানান।

[আরও পড়ুন: সদস্যপদ নবীকরণ করাননি! সিপিএমের সদস্যই নন চন্দননগরের জয়ী প্রার্থী অশোক গঙ্গোপাধ্যায়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement