শেখর চন্দ, আসানসোল: ফের সাইবার ক্রাইমের শিকার আসানসোলের (Asansol) এক যুবতী। গোপালপুরের বাসিন্দা অভিশ্রুতি মাজি পেশায় মেকআপ আর্টিস্ট। Phone Pay খুলতেই মুহূর্তে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৫৮ হাজার টাকা। কোনও লিংক না খোলা সত্বেও এইভাবে টাকা চলে যাওয়ায় রীতিমতো হতবাক অভিশ্রুতি। যে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের শাখায় ওই যুবতীর অ্যাকাউন্ট ছিল, সেখানে জানানোর পাশাপাশি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের সাইবার সেলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, অভিশ্রুতি মাজি শিলিগুড়ির এক পরিচিত ডিলারের কাছ থেকে বেশকিছু প্রসাধনী সামগ্রীর অর্ডার দিয়েছিলেন। ১৩ জুলাই মঙ্গলবার সেই পার্সেল আসার কথা ছিল। সেই কারণে সেদিন সকাল দশটার সময় ওই কুরিয়ার সংস্থার আসানসোলের কোর্ট মোড়ের অফিসে জানতে চান, তার পার্সেলের লোকেশান। সেখান থেকে বলা হয়, টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে তা জানতে হবে। সেই মতো তিনি গুগল সার্চ করে ওই কুরিয়ার সংস্থার টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেন। কিন্তু কথা হওয়ার আগেই সেই ফোন কেটে যায়। পর মুহূর্তেই অন্য একটি নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, বাড়ির ঠিকানা আপডেট করার জন্য ফোন পে থেকে ৫ টাকা তাদেরকে পাঠাতে হবে। কিন্তু অভিশ্রুতি তা দিতে অস্বীকার করেন। তা নিয়ে ফোন করা ব্যক্তির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটিও হয়। পরে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর আরও অন্য একটি নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, আপনি কুরিয়ার সংস্থার ডেলিভারি বয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। তাই তারা আপনার পার্সেল ডেলিভারি করবে না। তারা আপনার পার্সেল একটি বহুজাতিক অনলাইন ডেলিভারি সংস্থায় ট্রান্সফার করে দিয়েছে। এখন সেখান থেকে তা আপনাকে নিতে হবে।
[আরও পড়ুন: মাথাভাঙার মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীর পাশে প্রাক্তন ২ মন্ত্রী, দিলেন চিকিৎসার আশ্বাস]
বৃহস্পতিবার অভিশ্রুতি মাজি বলেন, “আমি জানতে চাই, কেন এমনটা হবে? যে কুরিয়ারে আমি অর্ডার দিয়েছি, তাঁরা তো আমার বাড়িতে পাঠাবে। অনেক টাকার জিনিস থাকায়, আমি কথা না বাড়িয়ে জানতে চাই কী করতে হবে? তখন ওই ব্যক্তি বলেন, কিছু করতে হবে না। শুধু কিছু নিয়ম মানতে হবে। আমাকে বলা হয় “Any Desk” নামে অ্যাপ ডাউনলোড করতে। আমি তা করি। পরে আমার কাছে ৯ সংখ্যার একটি ওটিপি আসে। আমি তা ওই ব্যক্তিকে শেয়ার করি। আমার ফোনে একটা লিংক আসে। কিন্তু আমি সেটা খুলিনি। পরে আমাকে ওই ব্যক্তি বলেন, দেখে নিন, আপনার ফোন পে থেকে কোন টাকা কাটা যায়নি তো? আমি বলি, না। তারপরও ওই ব্যক্তি বলেন ভাল করে দেখে নিন। এবার আমার সন্দেহ হওয়ায়, আমি আমার পার্সোনাল আইডি দিয়ে ফোন পে খুলি। আমি কথা বলতে বলতে দেখতে পাই মিনিট খানেকের মধ্যে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে ১০ টাকা ও পরের ন’বারে ৬৫০০ টাকা করে তুলে নেওয়া হল।” পুলিশে জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে।