বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: রাতভর একটানা জেরার পর হাঁসখালিতে ছাত্রীর ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় (Hanskhali Rape Case) গ্রেপ্তার তার প্রেমিক। এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলে সে। এই ঘটনায় এখনও আটক ২। তারা কিশোরীর প্রেমিকের বন্ধু বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। এদিকে, ধর্ষণের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে বিজেপির ডাকে হাঁসখালিতে চলছে ১২ ঘণ্টার বন্ধ। এলাকায় বন্ধ বেশিরভাগ দোকানপাট। তবে স্বাভাবিক যানচলাচল। এদিন নির্যাতিতার বাড়িতে বিজেপি এবং বাম মহিলা প্রতিনিধি দলের যাওয়ার কথা।
কিশোরীর ধর্ষণ ও মৃত্যু ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরপাকড়ে তৎপর পুলিশ। ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছে নির্যাতিতার প্রেমিক। রাতভর টানা জেরার পর অবশেষে সোমবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। সোহেল নামে ওই যুবকের দুই বন্ধুকেও আটক করেছে পুলিশ। রাতভরও তাদেরও জেরা করা হয়। কে বা কারা সেদিন তৃণমূল নেতার ছেলে সোহেলের জন্মদিনের পার্টিতে ছিল, পার্টি শেষে কে নির্যাতিতাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিল, সে সমস্ত তথ্যের খোঁজে পুলিশ। নির্যাতিতার প্রেমিক-সহ তিনজনকে জেরা করে এ সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় চাকরির ফাঁদ, শহরের হোটেলে ডেকে তরুণীর শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত]
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতেই নদিয়ার হাঁসখালির গ্যাড়াপোতা এলাকায় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে সোহেল গোয়ালির জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে বীভৎস অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয় ওই কিশোরী। সোহেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। পরিবারের দাবি, জন্মদিনের পার্টির নামে ডেকে নিয়ে গিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে সোহেল। এক মহিলা আত্মীয়ার সাহায্যে বাড়ি ফেরে কিশোরী। সেই সময় থেকে প্রচণ্ড অসুস্থ ছিল সে। রক্তক্ষরণও হতে থাকে। ভোরের দিকে কিশোরীর জন্য ওষুধ আনতে যান পরিবারের সদস্যরা। তবে ততক্ষণে সব শেষ। প্রাণ যায় নাবালিকার। তবে সেই সময় কাউকে কিছুই জানাননি নিহতের পরিজনেরা। দেহ দাহ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, সোহেলের পরিবারের তরফে দেহ দাহ করতে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তড়িঘড়ি দেহ দাহ না করলে প্রাণনাশের এবং বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হুমকি দেয় তারা। গত শুক্রবার হাঁসখালি থানায় সোহেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আপাতত পুলিশের জালে সোহেল।
হাঁসখালির ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ওই এলাকা-সহ গোটা বাংলা। এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রংও। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে আরও একবার অভিযোগ তুলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “যারা এ ধরনের অত্যাচার করছে তাদের ভয় বলে কিছু নেই তা বোঝাই যাচ্ছে।” ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূলের। ঘটনায় জড়িত শাস্তি পাবে বলেই মত ঘাসফুল শিবিরের।