ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: লাগাতার বনধ চালানো নিয়ে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে মোর্চা। রসদে টান পড়ায় মোর্চার অন্দরেই বনধ তুলে নেওয়ার দাবি জোরাল হচ্ছে। পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলিও বনধের রাস্তা ছেড়ে আলোচনার বিমল গুরুংয়ের দলকে বেরিয়ে আসতে বলেছে। মোর্চার ডাকা সর্বদল বৈঠক এড়ায় বাম ও তৃণমূল। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল হওয়ায় সমাধানসূত্রে খোঁজে গ্যাংটকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে দরবার করে মোর্চা। পাহাড় সচল রাখতে শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় রাজ্যের চার মন্ত্রী বৈঠক করেন।
[‘দেখুন পাহাড় কীরকম হাসছে!’, মমতাকে কটাক্ষ দিলীপের]
১২ জুন থেকে অচল পাহাড়। অনির্দিষ্টকালের বনধ। দার্জিলিং জুড়ে হিংসা, তাণ্ডব। এত কাণ্ডের পরও কেন্দ্রের থেকে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে একটা লাইনও পায়নি মোর্চা। প্রশাসনের চাপে দলের সভাপতি বিমল গুরং অজ্ঞাতবাসে। এই পরিস্থিতিতে বনধ আর কতদিন চালানো হবে তা নিয়ে মোর্চার মধ্যেই মতান্তর রয়েছে। লাগাতর বনধে পাহাড় জুড়ে খাবারের আকাল। রমজান মাসে সমস্যায় পড়েছেন সংখ্যালঘুরা। এই অবস্থা থেকে মুখরক্ষার খোঁজে মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল গুরুংয়ের দল। দার্জিলিংয়ের জিমখানা ক্লাবে মোর্চার এই বৈঠকে পাহাড়ের সবকটি দল গেলেও গরহাজির ছিল তৃণমূল ও বামেরা। হরকা বাহাদুরের দল জাপ, মদন তামাংয়ের গোর্খা লিগ, সিপিআরএম এবং জিএনএলএফের মতো দলগুলির প্রশ্নে বেকায়দায় পড়েন মোর্চা নেতারা। কারণ এক সপ্তাহ আগে এই দলগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল মোর্চা। তখন মোর্চাকে জিটিএ থেকে বেরিয়ে আসা, বিধায়কদের ইস্তফার দেওয়ার শর্ত দিয়েছিল ওই দলগুলি। সাত দিন পরও কেন তা কার্যকর হয়নি তা নিয়ে সরব হয় দলগুলি। তারা হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়ে দেয় মোর্চা জিটিএ না ছাড়লে এই নিয়ে আর আলোচনায় বসবে না। হরকা বাহাদুরের বক্তব্য, বনধ করে মানুষকে বিপাকে ফেলে এই আন্দোলনে কাজের কিছু হবে না। আন্দোলন করতে হলে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে হবে। মোর্চার বৈঠক থেকে গরহাজিরা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বামফ্রন্টের জেলা আহ্বায়ক জীবেশ সরকার। তাঁর বক্তব্য, বামেরা আলাদা রাজ্যের পক্ষে নেই। লাগাতার বনধ ডেকে পাহাড়ে হিংসা ছড়িয়ে কোনও লাভ হবে না। ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হোক। অন্য দলগুলির এই মনোভাব বুঝতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজেজুর সঙ্গে গ্যাংটকে দেখা করতে যায় মোর্চা।
[পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার আরজি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর]
রাজ্যের ডাকে বাইশে জুন শিলিগুড়িতে সর্বদলীয় বৈঠক। তার আগে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে সমতলে অর্থাৎ, উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক হয়। রাজ্যের চার মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, গৌতম দেব এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বৈঠকে ছিলেন। ওই বৈঠকে পাহাড়ের খাবার পরিবার পিছু ২০ কেজি করে বরাদ্দ চাল বাড়িয়ে দেওয়া হয়।৩৫ কেজি থেকে হল ৫৫ কেজি। পাহাড়ের খাবারের জোগান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। খাদ্যমন্ত্রী জানান, পাহাড়ে আর ২ সপ্তাহের মধ্যে খাবার রয়েছে। তার পর সংকট শুরু হবে। এদিনও পাহাড়ে তাণ্ডব চালায় মোর্চা। দার্জিলিংয়ে তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গরুবাথানেও কয়েক ঘণ্টা অবরোধ চলে।
The post পাহাড় সচলের লক্ষ্যে জোড়া বৈঠক, অধরা সমাধানসূত্র appeared first on Sangbad Pratidin.
