shono
Advertisement
Strike of Doctors

চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ৩টি মেডিক্যালে ঘুরেও হল না ভর্তি! প্রাণ গেল দেগঙ্গার যুবকের

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে সরব পরিবার। 
Published By: Subhankar PatraPosted: 08:45 PM Sep 11, 2024Updated: 08:49 PM Sep 11, 2024

অর্ণব দাস, বারাসত: অসুস্থ স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি দেখতে গিয়েছিলেন। পরের দিন ভোরবেলায় কর্মস্থলে রওনা দেন। রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মাথায়, ঘাড় শিরদাঁড়ায় এবং পায়ে গুরুতর চোট লাগে। অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে তিনটি মেডিক্যাল কলেজ ঘুরেও চিকিৎসা পাননি। শেষে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেও শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই  যুবকের মৃত্যু হয়েছে  অভিযোগ তুলে সরব পরিবার। 

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সফিকুল ইসলাম। তিনি দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের গাংআটি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় দিনমজুর সফিকুলের স্ত্রী সাইনারা বিবি অসুস্থতার কারণে বাপের বাড়িতে ছিলেন। ১ সেপ্টেম্বর তিনি হাবড়ার সোনাকেনিয়া গ্রামে গিয়েছিলেন। কাজে যোগ দিতে পরের দিন ভোরে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। হাবড়া-বেড়াঁচাপা রোড ধরে দেগঙ্গার বাড়িতে ফিরছিলেন সফিকুল।

[আরও পড়ুন: বাড়ির কাজে ভুল করায় নাবালিকাকে খুন্তির ছ্যাঁকা! গ্রেপ্তার সৎ মা ও বাবা]

কলাপোল এলাকায় পিছন থেকে আসা একটি ট্রাকের হর্ণের আওয়াজে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে ইটের গাদায় ধাক্কা মারে। প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সন্ধ্যায় তাকে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পর কলকাতার তিনটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।  প্রায় ৮-৯ ঘন্টা পর বাধ্য হয়ে যুবককে বারাসতের ১২নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃতের জামাইবাবু জাহাঙ্গির গাজি বলেন, "মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে ট্রলি পর্যন্ত পাইনি। অ্যাম্বুল্যান্সের ট্রলিতে এমার্জেন্সিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার বলেন কর্মবিরতি চলছে, কাউকে ভর্তি নেওয়া হবে না। এসএসকেএমেও একই অবস্থা। ওখানে দুঘণ্টা ঘুরেছি। বলেছে বেড নেই। তার পরে এনআরএসে নিয়ে গেলেও ভর্তি নেয়নি। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্যই এই ঘটনা ঘটছে, সাধারণ গরীব ঘরের মানুষ মরছে।"

স্বজন হারানোর শোকের মধ্যেও আর জি কর কাণ্ডের নিন্দা করে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন," দোষী সাজা পাক আমিও চাই। কিন্তু তা বোলে বিনা চিকিৎসায় গরিব মানুষ মরবে কেন?" মৃতের প্রতিবেশী লুৎফর রহমান জানান, 'রাত দুটো পর্যন্ত ঘুরেছি। কোথাও ভর্তি নেয়নি। শুধু বলছে ডাক্তার নেই, বেড খালি নেই। শেষে বাধ্য হয়ে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে ৪ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচার হয়। তবুও বাঁচানো যায়নি।'

[আরও পড়ুন: আতঙ্কে খোদ বিচারকরাই, হুমকি দিচ্ছে পুলিশ! জেলা জজকে চিঠি ৩ বিচারকের]

চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সর্মথন করে বিনা চিকিৎসায় গরীব মানুষের চিকিৎসক পাওয়া না পাওয়া নিয়ে বলেন, "ডাক্তাররা আন্দোলন করছে করুক। কিন্তু এরজন্য কত তরতাজা প্রাণ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, সেটাও একবার ভেবে দেখুক ডাক্তারবাবুরা।" আন্দোলনকারী অনেক চিকিৎসকই তো আবার বেসরকারি হাসপাতালে পরিষেবা দিচ্ছেন। তারা যদি সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা করেন তাহলে রোগীদের মৃত্যু হয় না।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অসুস্থ স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি দেখতে গিয়েছিলেন। পরের দিন ভোরবেলায় কর্মস্থলে রওনা দেন।
  • রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মাথায়, ঘাড় শিরদাঁড়ায় এবং পায়ে গুরুতর চোট লাগে।
  • অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে তিনটি মেডিক্যাল কলেজ ঘুরেও চিকিৎসা পাননি। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
Advertisement