সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: অন্ডালে (Andal) বনকর্মীদের ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশনে ষাঁড় ‘বাহুবলী’র মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক। ঘুমপাড়ানি ওষুধের মাত্রার হেরফেরে ষাঁড়টির মৃত্যু হয়েছে বলেই অভিযোগ পশুপ্রেমীদের একাংশের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করলেন স্থানীয় বিডিও। তাঁর দাবি, বয়সজনিত কারণে রক্তাল্পতা-সহ একাধিক সমস্যা ছিল ষাঁড়টির। এছাড়াও অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে তার।
বেশ কিছুদিন ধরেই অন্ডাল সাউথ বাজার রয়েলিটি মোড় সংলগ্ন এলাকায় একটি পূর্ণবয়স্ক কালো ষাঁড়ের (Ox) উৎপাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। ষাঁড়টির আক্রমণে গত এক সপ্তাহে আহত হয়েছে ৬ জন বাসিন্দা। তার মধ্যে ৩ জনের আঘাত ছিল গুরুতর। বুধবার সন্ধেয় ষাঁড়টি আচমকা আক্রমণ করে এলাকার বাসিন্দা রাজু জয়সওয়াল নামে এক যুবককে। পেটে ষাঁড়ের শিং ঢুকে যাওয়ায় মারাত্মক জখম হন তিনি। বর্তমানে ওই যুবক বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পেটে ৬টি সেলাই হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। সন্ধের পরই সাধারণত ষাঁড়টিকে এলাকায় দেখা যেত। তাই সন্ধের পর থেকে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়তেন স্থানীয়রা। মহম্মদ শাদাব খান নামে এক এলাকাবাসী জানান, “ষাঁড়টির জন্য আতঙ্কে দিন কাটছিল। তাই প্রশাসনের কাছে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম।”
[আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বিমানের ভিতরে সাপ! Dum Dum বিমানবন্দরে ছড়াল তীব্র চাঞ্চল্য]
স্থানীয়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার সন্ধেয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় গিয়ে ষাঁড়টিকে পাকড়াও করা হয়। সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন অন্ডালের বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস, অন্ডাল থানার পুলিশ আধিকারিক শান্তনু অধিকারী-সহ অন্যান্যরা। পা দড়ি দিয়ে বাঁধার পর ষাঁড়টিকে ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ পরই ষাঁড়টি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ৪ ঘণ্টা পর ষাঁড়টিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। শুক্রবার সকালে অন্ডাল থানা চত্বরে পশু চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে ষাঁড়টির ময়নাতদন্ত করা হয়। চিকিৎসক সুকান্ত রায় জানান, ষাঁড়টিকে ২ মিলিলিটার ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। ষাঁড়টির ওজন অনুযায়ী ইঞ্জেকশনের মাত্রা সঠিক। বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তাণ্ডব করছিল ষাঁড়টি। তাই আমরা ভেবেছিলাম ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে বয়সজনিত কারণে একাধিক রোগ বাসা বেঁধেছিল তার শরীর। ছিল রক্তাল্পতার সমস্যা। অত্যন্ত দুর্বলও ছিল ষাঁড়টি। তাই তার মৃত্যু হয়েছে।”