অভিষেক চৌধুরী, কালনা: এখন বঙ্গ বিজেপিতে (BJP) পদ মানেই গোলাম হয়ে যাওয়া। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাঘনাপাড়ায় এক বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অনুপম। তবে সেই সভায় ছিলেন না দলের কাটোয়ার সাংগঠনিক সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়।
অনুপম পদাধিকারী কয়েকজন নেতাকে নিশানা করেন। বছরের পর বছর অবহেলা করার কারণে বিজেপি কর্মীরা আরও হিংস্র হয়ে উঠছে, বলেও দাবি করেন। কারণ হিসাবে পদাধিকারীদের কাঠগড়ায় তোলেন। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুপম বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের তীব্র নিন্দা করেন। বলেন, “এখন যা বঙ্গ বিজেপির অবস্থা, পদ মানেই হচ্ছে আপনি তাদের গোলাম হয়ে গেলেন। পান থেকে চুন খসলেই আপনি শোকজ, নাহলে সাসপেন্ড, নাহলে পদ চলে যাবে।” এরপরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আরে সবাই কি চাকর হতে ভালোবাসে নাকি?’
[আরও পড়ুন: ‘বিশ্বভারতীর ফলকে রবি ঠাকুরের নাম থাকলে ভালো হতো’, এ কী বললেন দিলীপ ঘোষ?]
এদিন ঘরের শত্রু বিভীষণদের ঝাটা মেরে বের করে দেওয়ার নিদান দেন অনুপম। বলেন, “লোকসভা ভোটের মুখে আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের মধ্যে যেন কোনও চোর না থাকে। ঘরশত্রু বিভীষণদের ঝাঁটা মেরে বের করতে হবে। নাহলে আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি পশ্চিমবঙ্গে যে ৩৫ টি আসন দখলের কথা বলেছেন তা স্বপ্নই থেকে যাবে।” এরপরেই তিনি জানান, কিছু কিছু জায়গায় কিছু কিছু পদাধিকারী আছেন যাঁরা সন্ধে ৬টার পরে বিজেপি করে, রাতের বেলায় তৃণমূল নেতার বাড়িতে মাছ-মাংস খান। আরও এক ধাপ এগিয়ে বিজেপি নেতা জানান, “আপনারা চোখ-কান খোলা রাখলে দেখবেন বেশ কিছু নেতা আছে। আমাদের বোলপুরেও আছে। দিনে বিজেপি, রাতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে মাংস-ভাত খাচ্ছেন। আরও কিছু খাচ্ছেন। এসব দোঁ-আঁশলাগিরি বন্ধ হওয়া দরকার।”
এর পরেই অনুপম বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়ে জানান, যেসব পার্টি কর্মীর ক্ষোভ, বিক্ষোভ রয়েছে তাঁদের নিয়ে বসা ও কথা বলা উচিত। যদিও এদিনের বিজয়া সম্মিলনীতে কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে দেখা যায়নি। বিজেপি জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আজ দলের কোনও কর্মসূচি ছিল বলে আমার জানা নেই। উনি জাতীয়স্তরের নেতা। ওনার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে করতে পারেন। উনি দলের বিরুদ্ধে কিছু বললে সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মতামত।”