অর্ণব দাস, বারাকপুর: 'বন্দে মাতরম' ইস্যুতে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত 'বন্দে মাতরম' গানের ১৫০ বছর উপলক্ষে লোকসভায় আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে 'বঙ্কিমদা' বলে উল্লেখ করা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ চলছে। এমন আবহে শনিবার গণ কনভেনশনের ডাক দিল নৈহাটির বঙ্কিম ভবন গবেষণা কেন্দ্র। এই নৈহাটিই বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মস্থল। তাঁর স্মৃতি বিজড়িত বাসভবনের অংশ, কলেজ এবং গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে। এখানকার গবেষকদের মত, 'বন্দে মাতরম' নিয়ে যেসব তথ্যের ভিত্তিতে এই মুহূর্তে আলোচনা চলছে, সেসবের ঐতিহাসিক সূত্র, নির্ভরযোগ্যতা - এসব নিয়ে ভ্রান্তি দূর করতে এই আলোচনা সভার আয়োজন।
উল্লেখ্য, ১৮৩৮ সালের ২৬ জুন নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বসেই তিনি কালজয়ী 'বন্দে মাতরম' রচনা করেন। কাঁঠালপাড়ার সেই বাড়িটিই এখন বঙ্কিম-স্মৃতি বিজড়িত 'বঙ্কিম ভবন'। রয়েছে 'বঙ্কিম সংগ্রহশালা'ও। যদিও বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপৌত্র বলে দাবি করা সজল চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বাংলার সব জায়গায় রবীন্দ্রভবন থাকলেও বঙ্কিমভবন নেই। কিন্তু নৈহাটিতে সাহিত্যিকের বাসভবনটিই 'বঙ্কিম ভবন' এবং এখানে সংগ্রহশালা থেকে গবেষণা ক্ষেত্র - সবই রয়েছে।
নৈহাটির বঙ্কিম ভবনে 'বন্দে মাতরম কক্ষ', গানের রচনাস্থল। নিজস্ব ছবি।
বিতর্কের এই আবহে গণ কনভেনশন প্রসঙ্গে বঙ্কিম ভবন গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ রতন কুমার নন্দী বলেন, ''বন্দে মাতরম নিয়ে হইচই হচ্ছে। লোকসভার আলোচনায় তোষণ প্রসঙ্গ এল। প্রধানমন্ত্রী 'বঙ্কিমদা' বলে সম্বোধন করলেন। অনুরাগ ঠাকুর 'বন্দে ভারত' বললেন। হঠাৎ এই আলোচনা নিয়ে যে ব্যস্ততা তৈরি হচ্ছে, তার উদ্দেশ্য আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। সবথেকে বড় কথা, ১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর 'বন্দে মাতরম' লেখা হয়েছিল বলে আমাদের গবেষণায় কোনও সূত্র পাইনি, নির্ভরযোগ্য কোনও ভিত্তিও নেই। তাই কোথা থেকে এই তথ্য পেল তারা, তা আমাদের জানা দরকার। গোটা বিষয় নিয়ে আমাদের কিছু বক্তব্য আছে। এই সবটা আলোকপাত করতেই আমরা গন কনভেনশন করছি।''
