অর্ণব দাস, বারাকপুর: বধূ নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক নিয়ম বহির্ভূত কাজ। খড়দহ থানার তদন্তকারী সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিল বারাকপুর আদালত (Barrackpore Court)। পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশ পাওয়ামাত্রই অভিযুক্ত তদন্তকারী অফিসারকে ক্লোজ করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। অভিযুক্ত এসআই বিমল দত্তর বিরুদ্ধে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে অকারণ হেনস্তা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা, সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়া তল্লাশি চালানো এবং বাড়ি থেকে দেড় লক্ষ টাকা উধাওয়ের মতো একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই এই তদন্ত।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুরের (Sodepur) বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খড়দহ থানায় বধূ নির্যাতনের (Domestic Violence) অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযোগপত্রে নাম ছিল স্বামী রাহুল মুখোপাধ্যায়, শ্বশুর গৌতম মুখোপাধ্যায় এবং শাশুড়ি লেখা মুখোপাধ্যায়ের। এই অভিযোগের তদন্তে গত ১৬ জুলাই অভিযুক্তদের বাড়িতে যান সাব-ইন্সপেক্টর (SI) বিমল দত্ত। অভিযোগ, তদন্তের নামে ওই সাব-ইন্সপেক্টর বৃদ্ধ দম্পতিকে হেনস্থা করেন। সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই বাড়ি তছনছ করে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশির পর বৃদ্ধা তাঁর আলমারির লকারে রাখা নগদ দেড় লক্ষ টাকাও পারছিলেন না বলে অভিযোগ। এমনকি, বৃদ্ধার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করে দেন বলেও অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ‘আমিও বিষ মাল’, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের ‘জুতোপেটা’ কটাক্ষের কড়া জবাব কুণালের]
পরেরদিন ১৭ জুলাই বৃদ্ধ দম্পতি বারাকপুর আদালতের দ্বারস্থ হন। শুক্রবার অভিযোগ শোনার পর বিচারক পুলিশের ‘অতিসক্রিয়’ ভূমিকার অভিযোগের বিভাগীয় তদন্তের (Departmental Enquiry) নির্দেশ দেন। এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডি-ফ্রিজ করারও নির্দেশ দেয় আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবী সন্তু দাস বলেন, “কোর্টের অর্ডার ছাড়া এইভাবে পুলিশ গিয়ে সার্চ করতে পারে না। বৃদ্ধা মহিলার উপর যদি পুলিশই এইরকম অত্যাচার করে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পুলিশকে মানবিক হতে হবে। সেক্ষেত্রে কিছু পুলিশ দানবিক হয়ে উঠছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধেই আমার লড়াই।” বৃদ্ধা লেখা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ”আমার স্বামী বারবার পুলিশকে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখাতে বলেছিল। কিন্তু পুলিশ সেটা দেখায়নি। পুলিশ যদি বাড়িতে এসে এভাবে তাণ্ডব চালায়, তাহলে আমরা কার উপর ভরসা করব? ঘটনার পর থেকে ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি।”