ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সদ্য কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল-ত্যাগী প্রাক্তন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং। এক মাসের মধ্যে তাঁকে দলীয় পদাধিকার দিয়ে গোটা পাহাড়ের দায়িত্ব দিল প্রদেশ কংগ্রেস। সোমবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির নির্দেশে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় বিনয়কে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদে বহাল করা হল। সেই সঙ্গে তাঁকে দলের গোটা পাহাড়ের ইনচার্জ করা হল।
প্রায় দু দশক পর পাহাড়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে কংগ্রেসের ‘বাজি’ প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান। জল্পনা উসকে উঠেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) তাঁকেই দার্জিলিংয়ের প্রার্থী করা হচ্ছে কি না। সূত্রের খবর, পাহাড়ে ‘হাত’ শিবিরের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে তাঁকেই মুখ করতে চলেছে কংগ্রেস (Congress)।
এর আগে ১৯৫৭, ১৯৬২, ১৯৭৭ ও ২০০৪ সালে দার্জিলিং পাহাড় ছিল কংগ্রেসের সাংসদের দখলে। এরপর ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয় বিজেপির রাজত্ব। তাই ফের পাহাড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে বিনয়কে বড় দায়িত্ব দিল কংগ্রেস। পাহাড়ে একদা একচ্ছত্র আধিপত্য ছিলো সুভাষ ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ (GNLF)। তাঁকে পাহাড়ছাড়া করতে পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে তৈরি হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM)। ওই দলের অন্যতম সৈনিক ছিলেন বিনয় তামাং। তার পর বিমলের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) যোগ দেন। শুধু তাই নয়, ওই সময় বিনয় জিটিএ চেয়ারম্যান হন। কিন্তু তৃণমূলের হয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যান। পরে পাহাড়ে নতুন দল গড়েন একদা মোর্চার সঙ্গে যুক্ত থাকা অনীত থাপা (Anit Thapa)। তৃণমূল কংগ্রেসের অনীতের সঙ্গে সখ্যতা বাড়তেই দল ছাড়ে বিনয়। গত ২৬ নভেম্বর তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। দলে যোগ দিয়েই বড় পদ পেয়ে গেলেন।
যদিও বিনয় আদৌ পাহাড়ে প্রার্থী হতে পারবেন কিনা, সেটা নির্ভর করছে ইন্ডিয়া জোটের কী সমীকরণ হয় তার উপর। মঙ্গলবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হচ্ছে। সেখানেই ঠিক হবে পাহাড়ের আসনটি কারা লড়বে। ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে জোট নিয়ে আলোচনার পর বঙ্গ কংগ্রেসের নেতাদের কর্তব্য ঠিক করে দেবে এআইসিসি। বুধবার বিকেলে সেই কর্তব্য নিয়ে আলোচনার জন্যই প্রদেশের নেতাদের বৈঠকে ডাকল কংগ্রেস হাইকমান্ড। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে সেই বৈঠকে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি ছাড়াও থাকার কথা দেবপ্রসাদ রায়, প্রদীপ ভট্টাচার্য, নেপাল মাহাতো-সহ জনা পনেরো প্রদেশ নেতা। জোটে আসন সমঝোতা বঙ্গ কংগ্রেসের পছন্দমতো হবে না বলেই মনে করছে প্রদেশ নেতৃত্ব। যদিও সমঝোতা যাই হোক, বৈঠকে সেই সংক্রান্ত নির্দেশ প্রদেশকে জানিয়ে যথাযোগ্য ভূমিকা নিতে বলে দেওয়া হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।