shono
Advertisement
Bishnupur

বাংলাদেশি বলে ক্যাম্পে মারধর মহারাষ্ট্র পুলিশের, বাড়ি ফিরেও আতঙ্ক কাটছে না বিষ্ণুপুরের বাবাইয়ের

এখন থেকে বাংলায় থেকেই কাজ করবেন তিনি।
Published By: Suhrid DasPosted: 02:40 PM Aug 06, 2025Updated: 02:41 PM Aug 06, 2025

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বাংলাদেশি 'দাগিয়ে' আটদিন মহারাষ্ট্রে আটকে রাখা হয়েছিল বাংলার যুবক বাবাই সরদারকে। বাংলা থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল গিয়েছিল মহারাষ্ট্রে। শেষপর্যন্ত তিনি ক্যাম্প থেকে ছাড়া পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁকে সামনে দেখে আপ্লুত পরিবারের লোকজন। বাবাইয়ের চোখেমুখে আতঙ্ক। ক্যাম্পে তাঁর উপর 'অত্যাচার' করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। সেই কথা মনে আসলেই ভীত হয়ে পড়ছেন তিনি।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের নাগপুরে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের জুলপিয়ার যুবক বাবাই সরদার। বাংলায় কথা বলা বলার জন্য বাংলাদেশি 'দাগিয়ে' তাঁকে পাকড়াও করেছিল নাগপুরের পুলিশ। এরপর থানায় নিয়ে গিয়ে শুরু হয় 'অত্যাচার'। অন্যদের সঙ্গে তাঁকেও রাখা হয়েছিল ক্যাম্পে। বাবাই জানিয়েছেন, পাকড়াও করার পর থেকেই শুরু হইয় পুলিশের একাধিক প্রশ্ন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা, ভারতের নাগরিক। আসল পরিচয়পত্র সব থাকলেও পুলিশ কিছু শুনতে চায়নি বলে অভিযোগ। ক্রমাগত তাঁকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী 'তকমা' দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

একসময় শুরু হয় মারধর। ক্যাম্পে থাকাকালীন পুলিশ তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ। ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হবে বলেও ভয় দেখানো হত ক্যাম্পে। নাগপুর থেকেই বাবাইয়ের বিষ্ণপুরের বাড়িতে তাঁকে পাকড়াওয়ের খবর যায়। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলের চার প্রতিনিধি ও বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা নাগপুর গিয়েছিলেন। পরে নথিপত্র দেখে বাবাইকে ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাবাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

প্রথমে তিনি নাগপুর থেকে বিরতে চাইছিলেন না। পরিবারের লোকজন তাঁকে বাড়ি ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও তাঁকে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। তারপরই বাবাই বাংলায় ফিরে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল, মঙ্গলবার কলকআতা বিমানবন্দরে নামেন বাবাই। পরে রাতে বিষ্ণপুরের বাড়িতে ফেরেন। ছেলেকে দেখে যেন প্রাণ ফিরে পান বাবা-মা। বাবাই বলেন, "মহারাষ্ট্র পুলিশ আমার উপর অনেক অত্যাচার করেছে, মেরেছে। অনেক কষ্টে ক্যাম্প থেকে ছাড়া পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, পুলিশ যাঁরা আমাকে আনতে গিয়েছিলেন, সকলকে ধন্যবাদ।" তিনি আরও বলেন, "আর বাইরে যাব না আমি। আমার বাংলাতেই আমি থাকব।"

বাবাইয়ের মা রিতা দেবী বলেন, "মঙ্গলবার সকালেও জানতাম না, ছেলে আজই ঘরে ফিরবে। ছেলে জানিয়েছিল, কাজ করে কোম্পানি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে বাড়ি ফিরবে। আতঙ্কে ছিলাম। ওখানে থাকা যে ওর পক্ষে আর নিরাপদ নয়, সে ব্যাপারে অনেক বুঝিয়েছিলাম ওকে। শেষপর্যন্ত ও যে বুঝতে পেরে ফিরে এসেছে তাতেই খুব ভালো লাগছে।" মন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই যুবককে ঘরে ফিরিয়ে আনতে সবরকমভাবে চেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁদের অফিস থেকে সবসময় এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় ঘরে ফিরেছে বাবাই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। ওর ঘরে ফেরায় আমরা আনন্দিত।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলাদেশি 'দাগিয়ে' আটদিন মহারাষ্ট্রে আটকে রাখা হয়েছিল বাংলার যুবক বাবাই সরদারকে।
  • বাংলা থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল গিয়েছিল মহারাষ্ট্রে।
  • শেষপর্যন্ত তিনি ক্যাম্প থেকে ছাড়া পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাড়িতে ফিরেছেন।
Advertisement