অর্ণব দাস, বারাকপুর: সাংসদ পার্থ ভৌমিকের নির্দেশে সম্প্রতি প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের জগদ্দলের বাড়ি মজদুর ভবনের সামনে বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের নেতৃত্বে জয় বাংলা স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। এই ঘটনার সাত দিনের মধ্যে পার্থ ভৌমিকের বাসস্থান নৈহাটিতে সভা করে 'জয় বাংলা' বললে পেটানোর নিদান দিলেন অর্জুন। এনিয়ে তাকে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পার্থ ভৌমিক।
প্রসঙ্গত, গারুলিয়ার লেলিননগর ময়দানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার পর গত ১৬ ডিসেম্বর গারুলিয়ায় পালটা সভা করে বারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেছিলেন, "অর্জুন সিং বলেছে জয় বাংলা বললে মারবে। আমি সোমনাথ শ্যামকে দায়িত্ব দিচ্ছি, বুধবার কিছু কর্মী-সমর্থককে নিয়ে ওর(অর্জুন সিং) বাড়ির সামনে গিয়ে জয় বাংলা স্লোগান তুলতে। অর্জুন সিংয়ের দম দেখতে চাই। আমি পার্থ ভৌমিক ওকে চ্যালেঞ্জ করছি একজনের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক।"
এরপরই ১৭ ডিসেম্বর অর্জুনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার সন্ধ্যায় নৈহাটির গরুরফাঁড়ি মোড়ে বিজেপির পরিবর্তন সংকল্প সভা হয়। বক্তব্য রাখার সময় বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, "জয় বাংলা বললে পেটাবো একথাটা আগে বলিনি। এখন বলছি পার্থ ভৌমিককে। তোমার বাড়ির সামনে গিয়ে সভা করবো।" তাঁর দাবি, "জয় বাংলা বলে বাংলাদেশে দীপু দাসকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। জয় বাংলা বলে বাংলায় চন্দন দাস ও হরগোবিন্দ দাসকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। এই জয় বাংলা জিহাদিদের স্লোগান, বাংলাদেশি রোহিঙ্গাদের স্লোগান।"
সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, "তুমি (পার্থ ভৌমিক) কী ভেবেছো? জয় বাংলা স্লোগান তুলে এই জেহাদিরা তোমার বাড়ি পোড়াবে না তার কী কোনও নিশ্চয়তা আছে? তখন তোমার কী হাল হয় দেখো! জয় বাংলা স্লোগান বলে কোন বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, পাকিস্তানি বাড়ি পোড়াতে গেলে তাদের পেটাবো, থাপরাবো। আমার নামে মামলা করলে করো, তোমার (পার্থ ভৌমিক) বাড়ির সামনে গিয়ে বলে আসবো। তোমার কত দম আছে দেখবো।" জবাবে পালটা পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, "আসলে বাংলাদেশের জামাত'ও যা, এখানের আরএসএস-ও তাই। দুটোই উগ্র মৌলবাদী। বিজেপির আমলে ধর্ষকরা ছাড়া পায়, খুনিদের ছাড়ার প্রার্থনা করে। অন্যদিকে বাংলায় এই ধরনের ঘটনা ঘটলে দোষীদের সাজা হয়।" সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁর সংযোজন, "ওর (অর্জুন সিং) বাড়ির সামনে গিয়ে তো সোমনাথ শ্যাম জয় বাংলা বলে এল। ও তো কিছু করার ক্ষমতা থাকলে করত। আবারও বলছি, জয় বাংলা বললে একজনেরও যদি গায়ে হাত দেওয়া হয় অর্জুন সিংয়ের কি অবস্থা হবে বারাকপুরের মানুষ ঠিক করে দেবে।"
