shono
Advertisement

‘পাকা বাড়ি পায়নি কেন?’ BJP সাংসদের খোঁচায় TMC কর্মীর জবাব, ‘কেন্দ্রই টাকা আটকে রেখেছে’

করমণ্ডল দুর্ঘটনায় মৃত যুবকের পরিবারের পাশে সাংসদ।
Posted: 05:27 PM Aug 05, 2023Updated: 05:41 PM Aug 05, 2023

ধীমান রায়, কাটোয়া: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার দু’মাস পর মৃত্যু হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ভাটাকুল গ্রামের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক খোকন শেখের (৩৫)। শনিবার মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। আর মৃতের পরিবারের পাশে থাকার জন্য সাংসদ স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীকে ‘পরামর্শ’ দিতে গিয়ে অস্তস্তিতে পড়ে গেলেন। বস্তুত মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এসে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সামনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে ঠাট্টাচ্ছলে ‘খোঁচা’ দিতে যান বর্ষীয়ান সাংসদ। তখনই তিনি পালটা খোঁচা খেলেন ওই তৃণমূল কর্মীর কাছে। পরে বিষয়টি হালকা করে নিলেন সাংসদ নিজেই।

Advertisement

গত ২ জুন করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরেই চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ভাটাকুল গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের এক পরিযায়ী শ্রমিক শেখ খোকন। ওদিন ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর জখম হয়েছিলেন। তারপর থেকে টানা দু’মাস ধরে শেখ খোকন ভরতি ছিলেন ওড়িষার কটক হাসপাতালে। শুক্রবার ভোরে তাঁর সেখানেই মৃত্যু হয়। শনিবার ভোরে খোকনের মরদেহ গ্রামে নিয়ে এসে কবরস্থ করা হয়। জানা যায়, শেখ খোকনের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী বুল্টি খাতুন, দুই ছেলে শেখ রোহিত ও শেখ আরিফ। এছাড়া রয়েছেন বুল্টি খাতুনের বৃদ্ধ বাবা-মা। সামান্য খড়ের ছাউনি ছিটেবেরা ঘর। প্রচণ্ড দরিদ্র পরিবার।

[আরও পড়ুন: DA না পেলে স্বেচ্ছামৃত্যু! রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ অবসরপ্রাপ্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা]

শনিবার দুপুরে মৃত খোকনের বাড়িতে আসেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। তিনি আসার পরেই পাড়ার লোকজন জড়ো হন। সাংসদ দীর্ঘক্ষণ মৃতের পরিবারের ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে খোঁজখবর নেন। এরপর সাংসদ নিজেই স্থানীয়দের ভিড়ের মাঝে খোঁজ করতে থাকেন, “এখানে তৃণমূলের কে রয়েছ?” সাংসদের কথা শুনে একজন এগিয়ে গিয়ে সসম্মানে বলেন,”আমি রয়েছি স্যার। আমার নাম ফুলবাহার শেখ।”এরপর সাংসদ তাকে বলেন,”যারা করমণ্ডল দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন তাঁদের তো রাজ্য সরকার চাকরি দিয়েছে। এই জেলার মন্তেশ্বর ব্লকেরও দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবার চাকরি পেয়েছে। তোমরা তাহলে খোকনের পরিবারের জন্য বল, তাতে আমাকে যদি চিঠি লিখে দিতে হয় দেব।” তখন ফুলবাহার শেখ উত্তর দেন, “আমাদের বিধায়কের সঙ্গে এনিয়ে কথাবার্তা চলছে।”

তবে এখানেই থেমে থাকেননি সাংসদ। ফুলবাহার শেখ নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে সাংসদ এরপরেই বলেন, “ভাটাকুল গ্রামে আসার সময় আমি দেখলাম অনেক বাড়িতে পাকা ছাদ নেই। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনেকেই ঘর পায়নি। এটা তো পঞ্চায়েতের কাজ। তোমরা কাজ করছ না বলেই তো আমি জিতে গেলাম। আমাকে হারাবার জন্য অন্তত কাজ কর।” বসন্ত এভাবেই রাজ্যের শাসকদলকে খোঁচা দেন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। তখন ফুলবাহার শেখ পালটা সাংসদকে বললেন,”স্যার , আপনারাই তো কেন্দ্রের টাকা আটকে রেখেছেন। টাকা ছেড়ে দিতে বলুন।” আর সবার সামনে এই ধরনের উত্তর শুনে কিছুটা অপ্রস্তুতে পড়ে যান সাংসদ। সামলে নিয়ে তিনি তখন বলেন,”আবাস যোজনার টাকা আটকে নেই তো। একশো দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে রয়েছে। কারণ অডিটে ওই টাকা আটকে রয়েছে। আমরা আটকে রাখিনি।”

[আরও পড়ুন: কলকাতায় বেড়াতে এসে বিপত্তি, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল আসানসোলের ২ পড়ুয়া]

তবে ভাটাকুল গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক খোকন শেখ দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার পর থেকেই নিয়মিত খোঁজখবর রেখে যাচ্ছিলেন সাংসদ। একথা জানিয়ে মৃতের স্ত্রী বুল্টি খাতুন বলেন,”এমপি সাহেব আমাদের খুব সহযোগিতা করেছেন। তিনি আমার স্বামীর চিকিৎসার বিষয়ে সাহায্য করেছিলেন। দেহ আনার জন্য দু’টি গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি ওঁকে বলেছি আমার জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে।” সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া বলেন,” খোকন শেখ আহত হওয়ার পর রেল দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী ওর পরিবার দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। মারা যাওয়ার জন্য ১০ লক্ষ পাওয়ার কথা। রেল দপ্তরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বাকি ৮ লক্ষ টাকা দ্রুত পেয়ে যাবেন। আমি এই পরিবারটির পাশে আছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement