মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: দুটাকা, তিন টাকায় জলের দরে বিকোচ্ছে ফুলকপি। উদয় নারায়ণপুরে মাথায় হাত চাষিদের। তাঁদের বক্তব্য, যদি কিষাণ মান্ডি সঠিক জায়গায় করা হত বা উদয় নারায়ণপুরে সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হত, তাহলে হয়তো কিছুটা লাভ পেতে পারতেন।
হাওড়ার উদয় নারায়ণপুরের কয়েক হাজার হেক্টর সবজি চাষ হয়। এবারেও ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, মটরশুটি, টমেটো থেকে শুরু করে নানান সবজির চাষ করেছেন চাষিরা। আশা ছিল, এবার বৃষ্টিতে ধানের যে ক্ষতি হয়েছে, সবজি চাষে হয়তো সেই লোকসান পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু সবজির দাম এতটাই তলানিতে যে তাদের সেই আশায় জল ঢেলেছে। চাষিরা জানিয়েছেন, এখানে ফুলকপির পাইকারি দর দুই থেকে তিন টাকা প্রতি পিস। অথচ, বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই লোকসান হচ্ছে ফুলকপি চাষিদের।
বাধ্য হয়ে অনেকেই পশুকে খাওয়াচ্ছেন সেই ফুলকপি। অন্যান্য সবজির দরও তলা নিতে। বাঁধাকপি পাঁচ কেজি ৩০ টাকা। ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি রেটে। উত্তম মণ্ডল নামে এক ফুলকপি চাষি বলেন, "তিনি ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এখনও তিনি ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারেননি।" একই কথা জানান, হাওড়া জেলা পরিষদের সদস্য তথা উদয় নারায়ণপুরের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় সামন্তও।
চাষিদের দাবি উদয় নারায়ণপুরে সব্জি সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনকি, কিষাণ মান্ডিও মূল বাজার থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে পাঁচারুলের প্রত্যন্ত গ্রামে। একেবারে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে সেটি। যদি সেটি উদয় নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি হত, তাহলে চাষিরা কিছুটা হলেও দাম বেশি পেতেন। ফোঁড়েরাও বাজার নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ। চাষিরা চান, উদয় নারায়ণপুরে অবশ্যই একটা ভালো সবজি সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হোক। উদয় নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্যাণ গায়েন বলেন, "আমরা সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। বিধায়ক সমীর পাঁজার সঙ্গে কথা বলব।"