shono
Advertisement
North Bengal

শীত জাঁকিয়ে পড়লেও বৃষ্টি কই? মাথায় হাত ১০ হাজার চা-চাষির

'ফার্স্ট ফ্ল্যাশ' নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে চা বলয়ে।
Published By: Subhankar PatraPosted: 02:41 PM Jan 02, 2025Updated: 02:41 PM Jan 02, 2025

স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে উত্তরে শীত পাড়ি জমালেও নতুন বছরের শুরুতেও দেখা মেলেনি বৃষ্টির। বেলা গড়িয়ে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের উত্তাপ নেই। উলটে বেলা বাড়তে হাড় কাঁপাচ্ছে উত্তুরে হিমেল হাওয়া। সঙ্গে কুয়াশার দাপট। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি দেখে মাথায় হাত পড়েছে দশ হাজার চা চাষি এবং বড় চা বাগান কর্তৃপক্ষের। ছেঁটে দেওয়া গাছ ঠান্ডার জন্য থমকে দাঁড়িয়েছে। দুটি পাতার দেখা মিলছে না। স্বভাবতই লাভজনক 'ফার্স্ট ফ্ল‌্যাশ' নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে চা বলয়ে।

Advertisement

প্রশ্ন ঘুরছে, শীতের দাপটে এবারও কি পিছিয়ে যেতে চলেছে চা মরশুম? কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "গত বছরে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্ল্যাশ মার খেয়েছে। অতিবর্ষণের জন্য বর্ষাকালীন উৎপাদন উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে। এবার শীতে এখনও বৃষ্টি নেই। খুবই চিন্তায় আছি। পাতা না হলে মরশুম পিছিয়ে যেতে পারে।"

টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুয়ার্স ও তরাইয়ে প্রতিবছর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়ে থাকে। দুবছর ধরে সেটা হচ্ছে না। ২০২৩ সালে শীতের মরশুমে বৃষ্টির অভাবে প্রয়োজনীয় কাঁচা চা পাতা না মেলায় বেশিরভাগ বটলিফ কারখানার দরজা বন্ধ হয়ে যায়। গত বছরের একই পরিস্থিতি ছিল। আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখে চা বলয়ে শঙ্কা জেগেছে, এবারও কি একই সমস্যা হতে চলেছে!

চা বিশেষজ্ঞদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস থেকে চা গাছ ছেঁটে দেওয়ার কাজ চলে। এরপর বৃষ্টির ছোঁয়া মিলতে দুটি পাতার কুশি চলে আসে। এবার জানুয়ারির শুরুতে গত বছরের মতো বৃষ্টির দেখা মেলেনি। কৃত্রিমভাবে সেচের ব্যবস্থা করে গাছ বাঁচিয়ে রাখা গেলেও পাতা নেই।

চা চাষিরা জানান, ভালো চা পাতা উৎপাদনের জন্য কড়া রোদ, লম্বা দিন ভীষণ প্রয়োজন। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। কুয়াশাচ্ছন্ন দিনরাত। এই আবহাওয়া চা শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানান, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে চা পাতা তোলার কাজ শুরুর কথা। সেটাই 'ফার্স্ট ফ্ল‌্যাশ'। অর্থাৎ মরশুমের প্রথম চা পাতা। দুমাস পাতা তোলার কাজ চলে। কিন্তু এবার গাছের বৃদ্ধির জন্য যে রোদ ও বৃষ্টি প্রয়োজন সেটা মিলছে না। তিনি বলেন, "চা পাতা উৎপাদকরা ফার্স্ট ফ্ল‌্যাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ, এই সময় যে পাতা হয় সেটার কেজি প্রতি দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা থাকে।"

চা শিল্পপতি পূরণজিৎ বক্সিগুপ্ত জানান, "আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি চললে পাতার উৎপাদন ৩০ শতাংশেরও বেশি কমতে পারে। গতবছর কাঁচা চা পাতা উৎপাদন তেমন না হওয়ায় উত্তরে ২১৫টি বটলিফ কারখানার মধ্যে অর্ধেক খোলেনি।" নর্থবেঙ্গল টি প্রডিউসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সতীশ মিত্রুকা জানান, "গত বছর মরশুমের শুরুতে কারখানা খুলে পাতার জন্য বসে থাকতে হয়েছে। এবার কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে বোঝা যাচ্ছে না।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে উত্তরে শীত পাড়ি জমালেও নতুন বছরের শুরুতেও দেখা মেলেনি বৃষ্টির।
  • বেলা গড়িয়ে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের উত্তাপ নেই। উলটে বেলা বাড়তে হাড় কাঁপাচ্ছে উত্তুরে হিমেল হাওয়া। সঙ্গে কুয়াশার দাপট।
  • আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি দেখে মাথায় হাত পড়েছে দশ হাজার চা চাষি এবং বড় চা বাগান কর্তৃপক্ষের।
Advertisement