সুবীর দাস, কল্যাণী: ডাল, বেসন আর ডিম দিয়ে তৈরি বড়া খেয়েছিল পরিবারের সকলে মিলে। নৈশভোজে (Dinner) ভাতের সঙ্গে এই বড়া খাওয়া যে মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কেউ। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তেমনটাই। এই খাবার থেকে কোনওভাবে বিষক্রিয়া হয়ে প্রাণ হারাল মাত্র ৮ বছরের মেয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে হালিশহরের কুমোরপাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্রেয়সী দে’র মৃত্যু (Death) হয়েছে। তার মা-সহ পরিবারের আরও চারজন ভরতি কল্যাণীর হাসপাতালে। তবে নিজেদের অসুস্থতা ভুলে পরিবারের ছোট মেয়ের মৃত্যুতে শোকে কাতর গোটা পরিবার।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। ওইদিন হালিশহর (Halisahar) পুরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কুমোরপাড়া এলাকার বাসিন্দা দে পরিবার একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে। মেনুতে ছিল ভাত এবং ডাল-ডিম-বেসন দিয়ে তৈরি একটি বড়া। তা খাওয়ার পর থেকে বাড়ির প্রায় সকলের পেট খারাপ হয়। বারবার শৌচালয়ে যেতে হয়। মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে কল্যাণী (Kalyani) জেএমএ হাসপাতালে ভরতি করা হয় মোট চারজনকে। তার মধ্যে ছিল বছর আটের শ্রেয়সী, তার মা শিখা দে, মাসি সুভদ্রা দে, দিদা বুলবুল দে এবং দাদু গোপাল দে। রাতেই মৃত্যু হয় শ্রেয়সীর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সকলেই ফুড পয়জনিং (Food Poison) অর্থাৎ খাবারে বিষক্রিয়াতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীরের থেকেও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বাংলায়!’ মুক্তি পেল ‘দ্য ডায়রি অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’ ছবির ট্রেলার]
বাকি সকলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এঁদের মধ্যে সুভদ্রা দেবীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বাড়ির রান্না খেয়ে কীভাবে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হলেন তাঁরা? এ বিষয়ে পরিবারের সকলেই অবশ্য অন্ধকারে। মৃত শ্রেয়সীর মা শিখাদেবী কাঁদতে কাঁদতে জানালেন, মেয়ের তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি। কেবল দু,একবার সে মলত্যাগ করেছিল। কিন্তু তারপর থেকেই শরীর খারাপ করতে শুরু হয়। তাই তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু এভাবে মেয়েকে হারাতে হবে, ভাবতেও পারছেন না। পুলিশ জানিয়েছে, শ্রেয়সীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের (Post Mortem) জন্য পাঠানো হয়েছে। তা শেষ হলে আজই দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।