অর্ক দে, বর্ধমান: রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট সিপিএম (CPM) নেতার। আর তাতেই বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে। পরে অবশ্য পোস্টটি ডিলিট করে দেন তিনি। তবে তাতেও বিতর্ক থামানো যায়নি। এনিয়ে তৃণমূলের (TMC)কটাক্ষ, বিজেপি ও সিপিএমের এক সুর। সিপিএম নেতা কেন এই ধরনের পোস্ট করলেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বও। এই বিষয়ে সিপিএম নেতার সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বর্ধমান উত্তর (Burdwan North) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০২১ সালের সিপিএম প্রার্থী হয়েছিলেন চণ্ডীচরণ লেট। তিনি বর্ধমান উত্তর এরিয়া কমিটির সদস্যও। শনিবার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট (Facebook Post) করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘বর্বরোচিত পুলিশিরাজ শেষ হোক। অবিলম্বে ৩৫৬ জারি হোক।’’ পরে যদিও পোস্টটি তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন। সিপিএমের নেতার ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ চেয়ে এই পোস্ট ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
এর আগেও কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বরাবরই এই ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন নেতাকে। এছাড়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সম্প্রতি ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা নিয়েও সরব হয়েছেন। যদিও এই বিষয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন, ‘‘রাজ্যের পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে একথা সত্যি। কিন্তু তার মানে একটা নির্বাচিত সরকারকে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে ফেলে দেওয়ার তত্ত্বে আমরা বিশ্বাস করি না। মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের লড়াই শুরু হয়েছে। যে মানুষ ভুল বুঝে এদের মসনদে বসিয়েছেন তাঁরাই এদের আসন থেকে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবে।’’
[আরও পড়ুন: রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, চাপে পড়ে ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চাইলেন অমোঘ লীলা]
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম দিবাস্বপ্ন দেখছে। রাজ্যে বাম আমলের দুঃশাসন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এই ধরনের পোস্ট থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার বাম আর রাম এক হয়ে গিয়েছে। বামের মুখে এক কথা বলেছে, অন্যদিকে পিছন থেকে বিজেপিকে যে মদত দিচ্ছে তারা। আমাদের নেতারা আগে থেকেই এই কথা বলে আসেছিলেন, এই পোস্ট সেটাই প্রমাণ করছে।”
[আরও পড়ুন: বেকার ভোট দিয়েছি আপনাকে! ‘টক টু মেয়র’-এ কটাক্ষ শুনে চটে লাল গৌতম দেব]
যদিও এই পোস্ট করার বিষয়ে নিজের যুক্তি খাঁড়া করে চণ্ডীচরণ লেট জানান, ‘‘না, ওটা তেমন কোন বিষয় নয়। ওটা অন্য একটা কারণে করেছিলাম। ৩৫৬ করে কী হবে? রাজ্যে লড়াই করতে হবে মাটিতে নেমে।’’ তাহলে কেন এই পোস্ট করেছিলেন তিনি তার স্বপক্ষেও এক অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার কিছু তথ্যের দরকার ছিল। তাই পোস্ট করেছিলাম। তথ্য পেয়ে গিয়েছি, উড়িয়ে দিয়েছি।’’ সিপিএমের বর্ধমান উত্তর এরিয়া কমিটির সম্পাদক মৃণাল কর্মকারের বক্তব্য বলেন, ‘‘এটা আমাদের পার্টির কোনও সিদ্ধান্ত নয়। আর এ বিষয়ে আমরা বিশ্বাসী নই। চণ্ডীচরণ কেন এটা পোস্ট করেছে আমি বলতে পারব না। এটা দলের বক্তব্য নয়। ওর ব্যক্তিগত বক্তব্য হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে আমি ওর সঙ্গে কথা বলব।’’
