ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: গোর্খাল্যান্ড দাবিতে পাহাড়ের ‘দাদা’ হওয়ার চেষ্টায় মোর্চা। অন্য দলগুলিকে পাশে চাইলেও, আন্দোলনের নেতৃত্ব যে তাদের হাতেই থাকবে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিমল গুরুং। আর এখানেই বেধেছে গণ্ডগোল, বিভ্রান্তি। শুরুতে চুপ থাকলেও, এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে অনেকেই। মোর্চার ডাকা সর্বদল বৈঠকে আদৌ থাকবে কিনা তা নিয়ে জিএনএলএফ ধোঁয়াশা রেখেছে। পাশাপাশি শর্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মোর্চাকে চাপের রাস্তায় রেখেছে জিএনএলএফ। পাহাড়ের আর এক দল হরকা বাহাদুর ছেত্রীর জাপও মোর্চার সঙ্গ নিয়ে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে।
[চকবাজারে বিশাল মিছিলে মোর্চার শক্তি প্রদর্শন, ‘দূরত্ব’ জিএনএলএফের]
পাহাড়ে তারাই রাজা। অতএব, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের ব্যাটন থাকবে মোর্চার হাতে। মুখে ঐক্যবদ্ধ ভাব দেখালেও, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে তারাই যে মুখ এটা বারবার বলেছেন বিমল গুরুং। অন্য দলগুলিকে পাশে চাইলেও ঘুরিয়ে তাদের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন মোর্চা প্রধান। গুরুং শুক্রবার জানিয়েছিলেন কেউ যেন তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতকতা না করে। মোর্চা সুপ্রিমোর হাঁক কী পাতলেবাসের পাহাড়ে আটকে গেল। এই প্রশ্ন এবার উঠতে শুরু করেছে। কারণ গুরুংয়ের বার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য চাল দিয়েছে জিএনএলএফ। শনিবার মোর্চার ডাকে দার্জিলিংয়ের মিছিল এড়িয়ে যায় পাহাড়ের এই গুরুত্বপূর্ণ দল। আগামী ২৯ জুন মোর্চা সর্বদল বৈঠক ডেকেছে। এই বৈঠকে তাদের উপস্থিতি নিয়েও কৌশলী অবস্থান নিয়েছে জিএনএলএফ। দলের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রীর বক্তব্য, মোর্চার ডাকা সর্বদল বৈঠকে থাকার ব্যাপারে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি রবিবার জরুরী বৈঠকে বসছে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
[কালনায় প্রহৃত জর্জ বেকার, অভিযোগ ওড়াল তৃণমূল]
এর আগে সর্বদল বৈঠকে মোর্চাকে চারটি শর্ত দিয়েছিল জিএনএলএফ। যার মধ্যে ছিল পাহাড়ের বিধায়কদের ইস্তফা, জিটিএ সদস্যদের পদত্যাগের মতো বিষয়। এর মধ্যে মাত্র একটি শর্ত মেনেছে মোর্চা। এই অবস্থায় মোর্চার আন্দোলনে আর কতটা তাদের পাওয়া যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে জিএনএলএফ। মহেন্দ্র ছেত্রীর বক্তব্য, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন একক দলের কোনও কর্মসূচি নয়। এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। পাহাড়ের এই গুরুত্বপূর্ণ দলের পাশাপাশি বেসুরো হওয়ার দিনে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী। জাপ নেতা হরকা শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন। কালিম্পংয়ের এই নেতার অসুস্থতায় জাপ কীভাবে মোর্চার পাশে থাকবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। শনিবার মোর্চার মিছিলে থাকার কথা ছিল জাপের। এই নিয়ে হরকা বলেন, ওই মিছিলে তাদের কেউ ছিলেন কিনা তা তিনি জানেন না। অতএব জল গড়াচ্ছে। গুরুংয়ের বিশ্বাসঘাতকতার হুঁশিয়ার কি ফাঁকা আওয়াজ। সেই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও পাহাড়ের আবহাওয়ার মতোই পাল্টাচ্ছে দলগুলির মতি-গতি।
The post মোর্চার আন্দোলনের ঐক্যে ‘ফাটল’? বেসুরো জিএনএলএফ, হরকা appeared first on Sangbad Pratidin.
