নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দেউচা-পাচামিতে (Deucha-Pachami) তৈরি হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি প্রকল্প। রাজ্য সরকারের বাড়তি উদ্যোগে যথাযথ ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন প্যাকেজ দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্তু তারপরও জোর করে উচ্ছেদের মাধ্যমে জমি দখল করে রাজ্য সরকার প্রকল্প গড়ছে বলে বিরোধীরা অভিযোগে সরব। বুধবার এই রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে দেউচা প্রকল্পে ঢুকতে গিয়ে আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়লেন দুই বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), অধীররঞ্জন চৌধুরী। এটা রাজনীতি করার জায়গা নয় – এই বার্তা দিয়ে তাঁদের কার্যত গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হল। যদিও শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি, এখানে নন্দীগ্রামের চেয়েও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বুধবার দুপুরে বীরভূমের দেউচা-পাচামি প্রকল্পে ঢুকতে যান অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অন্যান্য নেতারা। তবে সোঁতসাল মোড়ে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়। চাঁদা গ্রামের দিকে এগোতে গেলে বীরভূম জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার তরফে আদিবাসী সদস্যরা রাস্তা আটকে অবরোধ শুরু করেন। থমকে যান অধীর চৌধুরীরা। তিনি অভিযোগ করেন, জোর করে আদিবাসীদের জমি কেড়ে কয়লা খনি প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু মহাসভার তরফে গণেশ কিস্কু, শিবলাল সোরেনরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এটা রাজনীতি করার জায়গা নয়। কোনও রাজনৈতিক নেতাকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। এরপরই ফিরে যান কংগ্রেস সাংসদ।
[আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত দিল্লির আরও এক ক্রিকেটার, পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়ে ধোঁয়াশা]
অন্যদিকে, এদিনই দেউচায় যাওয়ার পূর্বপরিকল্পিত কর্মসূচি ছিল বিজেপিরও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে দেউচার উদ্দেশে রওনা দেন। তবে এদিন সকাল থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে দেউচা প্রকল্পের কাছে পোস্টার পড়েছিল। লেখা ছিল – ‘শুভেন্দু অধিকারী দূর হঠো।’
তাঁরা দেউচার দিকে না গিয়ে জামবনি গ্রামে ঢুকে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর বিকেলে গ্রাম থেকে বেরিয়ে জানান, ”নন্দীগ্রামের চেয়েও বড় আন্দোলন গড়ে তুলব এখানে। ৮ মে’র পর থেকে উচ্ছেদ বিরোধী লাগাতার আন্দোলন চলবে।” বুধবার থেকেই কলকাতায় শুরু হয়েছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। দেশবিদেশের শিল্পপতিরা বাংলায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ঠিক এমনই সময় দেউচায় গিয়ে বিরোধীরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন বলেই পালটা অভিযোগ তুলেছে শাসকদল।
শুভেন্দুর এই হুঁশিয়ারি নিয়ে ব্রাত্য বসুর প্রতিক্রিয়া, ”নন্দীগ্রামের আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। দেউচায় হিম্মত থাকলে আন্দোলন করে দেখান। কারণ মানুষ ওঁদের সঙ্গে নেই। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছেন। ওখান থেকে খোল-করতাল বাজিয়ে ফিরে আসতে হবে বিরোধীদের। রাজনৈতিক নেতারা তখনই আন্দোলন করতে পারেন যখন সঙ্গে মানুষ থাকেন। মানুষ কর্মসংস্থান চাইছে। যখন একটা রাজ্যে শিল্প সম্মেলন চলছে। শিল্পপতিরা নিজের মুখে হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নি করবেন বলে জানাচ্ছেন। সেই সময় দেউচা পচামি ক্লোজড বলার মধ্যে দিয়ে বাংলার যুবকদের স্বপ্নকে আঘাত করা হয়েছে।”