অভিষেক চৌধুরী, কালনা: মার্কিন মুলুকে পাড়ি বাংলার দুর্গামূর্তির। পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) নাদনঘাট থানা এলাকায় ফাইবার ও কাঠ দিয়ে তৈরি হওয়া দুর্গামূর্তিতেই (Durga) এবার সূদূর আমেরিকার (USA) পুজো হবে। তাই দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন জাহান্নগর পঞ্চায়েতের মাগনপুরের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী শঙ্কু দেবনাথ নামের এক শিল্পী। বিদেশে পাড়ি দেওয়ার আগে শিল্পীর নিপুণ হাতের দক্ষতায় তৈরি হওয়া নজরকাড়া সেই প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন দূরদূরান্তের বাসিন্দারা।
তরুণ শিল্পী শঙ্কু দেবনাথের বাড়ি পূর্বস্থলী (Purbasthali) ১ ব্লকের মাগনপুর গ্রামে। সিমেন্ট, ফাইবার, পাথর ও পিতল দিয়ে বিভিন্ন মূর্তি ও নজরকাড়া শিল্প তৈরি করে খুব অল্প বয়সেই সুনাম কুড়িয়েছেন শঙ্কু। যদিও এই প্রথমবার দুর্গা তৈরির অর্ডার (Order) পেয়েছেন তিনি। তাও আবার সূদূর আমেরিকা থেকে। মাত্র দুমাস আগেই এই বরাত এসেছে। আর তার পর থেকে দিনরাত এক করে চলছে অক্লান্ত পরিশ্রম। বুধবার বিমান যোগে দুর্গামূর্তি পৌঁছে যাবে মার্কিন মুলুকে। মূর্তিটি লম্বায় সাড়ে তিন ফুট, চওড়ায় চার ফুটের তৈরি কাঠের পাটাতনের উপর দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর-সহ বাহনদেরও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন কারুকার্য দিয়ে। রংবেরংয়ের পাথর ও সিটি গোল্ডের গয়না দিয়ে সাজানো হচ্ছে দেবদেবীদের। আর এই কাজে শঙ্কুকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর বাবা মদন দেবনাথ, মা প্রণতি দেবী ও বোন পায়েল।
[আরও পডুন: মালদহের বেহুলা সেতুতে ফাটল, ছবি তুলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সতর্ক করলেন থানার IC]
কৃষ্ণনগর (Krishnagar) থেকে মূর্তি গড়া ও সাজানোর কাজ শিখেছেন শিল্পী শঙ্কু জানান, “দুমাস আগে প্রতিবেশী দাদা তাপস দে’র মাধ্যমে আমেরিকা থেকে ঠাকুর তৈরির অর্ডারটি জীবনে প্রথমবার পেলাম। এর মধ্যে কোরিয়া থেকেও আরও একটি দুর্গামূর্তি বানানোর বরাত এসেছিল। হাতে সময় না থাকায় সেই অর্ডারটা নিতে পারিনি। কাঠের পাটাতনের উপর ফাইবারের তৈরি এই মূর্তির ওজন প্রায় ৬০ কেজি হবে।” ঠাকুর তৈরির মজুরি হিসাবে ৪ লক্ষ টাকা পাবেন শিল্পী শঙ্কু দেবনাথ। শিল্পীর বাবা মদন দেবনাথ বলেন, “বিদেশ থেকে এই প্রথমবার ছেলের ২ টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার মেলে। যদিও সে একটাই করছে। ছেলের হাতের নকশা ও কারুকার্যের সুনাম হওয়ায় আমরা গর্বিত।”
[আরও পডুন: খলিস্তানি বিতর্ক: কানাডার সমালোচনায় মোদি সরকারের পাশে কংগ্রেস]
যাঁর মাধ্যমে দুর্গামূর্তি তৈরির অর্ডার মিলেছে, সেই প্রতিবেশী তাপস দে বলেন,”অনিমেষ রায় নামে স্বরূপগঞ্জের এক বন্ধু সপরিবারে এখন আমেরিকার লুইজিয়ানা রাজ্যের ইলিনুইজ স্ট্রিটে থাকেন। তিনি একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তিনি ও তাঁর দুই ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দেড় দশক ধরে ওখানেই থাকেন। তাঁরা এবার প্রথমবার দুর্গাপুজো করবেন বলে মনস্থির করেছেন। এরপরেই ফোন করে এখান থেকে দুর্গামূর্তি তৈরির অর্ডার দেন শঙ্কু দেবনাথ নামে উঠতি শিল্পীকে। কারণ, তাঁর হাতের কাজ বর্তমানে সাড়া ফেলেছে বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। বিমানযোগে ক্যুরিয়ার করে তা পাঠানো হবে।”